বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মা-ছেলের আইনি লড়াই কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। ছোটবেলায় ছেলেকে দেখেননি মা। মা থাকতেও দিদা-দাদুর কাছে মানুষ হয়েছে সে। মায়ের স্নেহ ছাড়াই বড় হয়েছে সে। এখন ছোটবেলায় ছেড়ে যাওয়া মা বৃদ্ধ বয়সে ছেলের দ্বারস্থ হয়েছেন আর্থিক সাহায্য চেয়ে। যদিও মায়ের দায়িত্ব ভার নিতে রাজি নন ছেলে। গত বেশ কিছুদিন ধরে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বুধবার সেই মামলাটির নিষ্পত্তি করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
কী নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট? Calcutta High Court
৬৮ বছরে অসুস্থ বৃদ্ধা সেই মায়ের ভরণপোষণ ও চিকিৎসার প্রয়োজনীয় দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ছেলেকেই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। মায়ের চিকিৎসার খরচ এবং খাওয়াদাওয়া, ভরণপোষণের জন্য ন্যূনতম খরচ ছেলেকে দিতে হবে বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট। বুধবার এই মামলার শুনানিতে এসডিও-কে হাইকোর্টের নির্দেশ, মায়ের ন্যূনতম খরচের জন্য মাসে কত টাকা করে ছেলে পাঠাবেন, তা আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ঠিক করার নির্দেশ দিয়েছেন জাস্টিস সিনহা।
বুধবার মামলাটির নিষ্পত্তি করে নদিয়ার কল্যাণীর মহকুমাশাসককে (এসডিও) প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মা-ছেলের বিষয়ে আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এসডিও-কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ উচ্চ আদালতের। উল্লেখ্য, বৃদ্ধার ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। তিনি নাবিক। বর্তমানে আটলান্টিক মহাসাগরের জাহাজে রয়েছেন তিনি। তাঁর তরফে তাঁর স্ত্রী আদালতে হাজির ছিলেন।
মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, তার মক্কেল কোমড়ের নিচ থেকে আংশিকভাবে প্রতিবন্ধী। বর্তমানে ওই বৃদ্ধা হুইলচেয়ারের মাধ্যমে চলাফেরা করেন। বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যে হুইলচেয়ারের মাধ্যমে চলাফেরার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই।ইতিমধ্যেই হোম কর্তৃপক্ষ ওই বৃদ্ধাকে পরিকাঠামোগত উন্নত অন্য কোনো হোম বা অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিন ছেলের আইনজীবী আদালতে জানান, ট্রাইব্যুনালের রায় অনুযায়ী মাসে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করে দিতে তাঁর মক্কেলের আপত্তি নেই। যদিও বৃদ্ধার আইনজীবী পাল্টা জানান, তাঁর মক্কেলের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং চিকিৎসার জন্য এই টাকা যথেষ্ট নয়। সরাসরি কোনো টাকা দাবি না করলেও খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং চিকিৎসার জন্য যত টাকা দেওয়া উচিত বলে ওঁনারা মনে করেন তা দেওয়ার কথা বলা হয়।
আরও পড়ুন: এই কাজ করলেই বাতিল উত্তরপত্র, ৫০ বছর পর বদলাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকের একাধিক নিয়ম
এসডিও-র মতে, মাকে ভরণপোষণের জন্য ছেলে কত টাকা দেবেন, তা একমাত্র ছেলেই বলতে পারেন। পুত্রবধূ নন। নভেম্বর মাসের শেষের দিকে ওই বৃদ্ধার ছেলে ফিরবেন। আদালতের নির্দেশ সেই সময় ভার্চুয়াল মাধ্যমে এসডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন বৃদ্ধার পুত্র। আলোচনার মাধ্যমে এসডিও বিষয়টির নিষ্পত্তি করে দেবেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।