বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কথায় আছে ‘সবুরে মেওয়া ফলে!’ এবার এই প্রবাদই সত্যি হতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ‘হরিণখোলা ধ্রুব অধীশ্বর হাই স্কুলের’ ‘সংগঠক’ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জীবনে। বিগত প্রায় দু’দশক ধরে তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য বেতন পাননি। দীর্ঘদিন ধরে এই আইনি লড়াই চালানোর পর অবশেষে সুফল পেতে চলেছেন তাঁরা।
কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে রাজ্যের হার হল এই মামলায়
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে এমনই নির্দেশ মিলেছে। ইতিপূর্বে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ওই শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের ২০১১ সাল থেকে অনুমোদন দিয়ে ন্যায্য বেতন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকার জাস্টিস মুখোপাধ্যায়ের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দ্বারস্থ হয়েছিলেন ডিভিশন বেঞ্চের।
সেখানেও কয়েক দফা শুনানির পর খারিজ হয়ে গিয়েছে রাজ্যের আবেদন। এবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাই স্কুলের অনুমোদনের দিন থেকে অর্থাৎ ২০১১ সাল থেকে আবেদনকারী শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের স্বীকৃতি দিয়ে প্রাপ্য বেতন এবং বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। তাও আগামী তিন মাসের মধ্যে।
আদালত সূত্রে খবর ওই স্কুলের শিক্ষক মিনাল কান্তি কামারসহ একদল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী হাই স্কুলের অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। আবেদনকারীরা ১৯৮৬ সাল থেকে সংগঠক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। তারাই ওই স্কুলকে হাই স্কুলে উত্তীর্ণ করার অনুমোদন দেওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষা দপ্তার ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নানান যুক্তির বেড়াজালে আটকে যায় অনুমোদন। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২১ সালে হাই স্কুলের অনুমোদন দেয় রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর।
তবে সেই সাথে শর্ত দেওয়া হয় স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শিক্ষক শিক্ষা কর্মী নিয়োগ করতে হবে। এর ফলে এত বছর ধরে কাজ করা সংগঠক কর্মীরা তাদের বেতন থেকে বঞ্চিত হন। তাই তারাও তাদের প্রাপ্য অনুমোদন দেওয়ার দাবি নিয়ে আদালতে (Calcutta High Court) গিয়েছিলেন। সে সময় মামলার শুনানি হয়েছিল বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে।
আরও পড়ুন: ‘মিথ্যা বেশি দিন চলে না!’ সন্দেশখালি ইস্যুতে মমতার মন্তব্যে বিরাট শোরগোল
শুনানিতে বিচারপতি আবেদনকারীদের বঞ্চিত না করে ২০১১ সাল থেকে প্রাপ্য বেতন মিটিয়ে দেওয়ার পক্ষেই রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য পাল্টা জাস্টিস মুখ্যোপাধ্যায়ের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যায় ডিভিশন বেঞ্চে। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি ছিল অনুমোদনের সময় শিক্ষক-শিক্ষা কর্মী নিয়োগের শর্ত থাকায় তাদের অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়।
তবে অবশেষে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাস আগের বহাল রেখে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় ১৯৮৬ সাল থেকে কর্মরত সংগঠক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীরা এবার হাই স্কুলের অনুমোদনের সময়কাল থেকে তাদের প্রাপ্য বেতন সহ বকেয়া পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন। যদিও তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতিমধ্যেই অবসর গ্রহণ করেছেন।