বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্গাপুজোর অনুদানের টাকা কীভাবে খরচ হচ্ছে, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছিল। কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) সম্প্রতি এই বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়ার পর অবশেষে নড়েচড়ে বসেছে জেলার পুজো কমিটিগুলি। এ বার নিয়ম মেনে হিসেব জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছেন কমিটির কর্তারা।
হিসেব না দিলে মিলবে না অনুদানের চেক, আদালতের (Calcutta High Court) নির্দেশে নতুন সতর্কতা
রাজ্য সরকার কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দিয়ে আসছে। ধাপে ধাপে অনুদান বাড়তে বাড়তে এখন অনুদানের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকায়। কিন্তু অভিযোগ, অনেক কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দিচ্ছিল না। হাই কোর্টের (Calcutta High Court) হুঁশিয়ারির পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। প্রশাসনেরও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, এবার থেকে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে হিসেব না দিলে কোনও কমিটি অনুদানের চেক পাবে না।
কীভাবে খরচ করতে হবে অনুদান?
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, অনুদানের প্রায় ৪০ শতাংশ খরচ করতে হবে সামাজিক কাজে। যেমন- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, সিসিটিভি বসানো, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ে সচেতনতা প্রচার ইত্যাদি। এছাড়া পিছিয়ে পড়া পরিবারের হাতে পোশাক বিলির জন্যও টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে। বাকি অর্থ খরচ করা যাবে পুজোর আয়োজনেই। অভিযোগ, এতদিন বহু কমিটিই এই নিয়ম মানেনি। তবে আদালতের নজরদারির পর সকলে খাতায়-কলমে সঠিক হিসেব রাখার চেষ্টা শুরু করেছে বলে খবর সূত্রের।
শ্রীরামপুরের এক বারোয়ারি কমিটির কর্তা জানিয়েছেন, “আগে হিসেব তৈরি করতে দেরি হত, কিন্তু এ বার থেকেই আমরা খরচের বিল আগেভাগে তৈরি রাখছি।” চন্দননগর কমিশনারেটও জানিয়ে দিয়েছে, নির্দিষ্ট ফরম্যাটে হিসেব না জমা দিলে অনুদান মেলবে না। আরামবাগের বিভিন্ন কমিটি দাবি করেছে, গত বছর থেকেই তারা সামাজিক কাজ, বস্ত্র বিতরণ, করোনা সচেতনতা প্রচারের জন্য টাকা খরচ করেছে এবং থানায় তার হিসেব জমা দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে সন্দেহ, কড়া মন্তব্য হাই কোর্টের বিচারপতির
সব মিলিয়ে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) কড়া অবস্থানের ফলে পুজো অনুদানের টাকা খরচে বাড়ছে স্বচ্ছতা। পুজো কমিটিগুলি আগেভাগে হিসেব তৈরি করে প্রশাসনের কাছে জমা দিচ্ছে। অনুদানের টাকা এবার নিয়ম মেনে সামাজিক কাজ ও পুজোর খরচে ব্যবহার হচ্ছে কিনা, সেদিকে এবার কড়া নজর রাখছে প্রশাসনের।