বাংলা হান্ট ডেস্কঃ খেজুরির জোড়া রহস্যমৃত্যু মামলায় ফের বড় পদক্ষেপ নিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। এসএসকেএমে হওয়া দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত রিপোর্টে একাধিক আঘাতের কথা স্পষ্টভাবে উঠে আসায় আদালত রাজ্যকে নতুন মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বেঞ্চ জানিয়েছে, “১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বোর্ডকে পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা সহ রিপোর্ট জমা দিতে হবে।”
১১ই জুলাই সকালে উদ্ধার হয় দুই যুবকের দেহ
গত ১১ জুলাই খেজুরি থানার ভাঙনমারি গ্রামে মহরম উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছিল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। পরদিন সকালে উদ্ধার হয় দুই যুবক, সুধীর পাইক ও সুজিত দাসের রক্তাক্ত দেহ। পরিবারের দাবি, তাঁদের শরীরে ছিল একাধিক আঘাতের চিহ্ন। কিন্তু অনুষ্ঠান আয়োজক ও শাসকদলের দাবি ছিল, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে।” প্রথম ময়নাতদন্ত রিপোর্টও সেই বক্তব্যকে সমর্থন করেছিল।
এসএসকেএমে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের পর উঠে আসে ভিন্ন ছবি। রিপোর্টে উল্লেখ থাকে, সুধীরের দেহে ২৪টি আঘাত এবং সুজিতের দেহে একাধিক গভীর আঘাতের চিহ্ন। এর পর থেকেই প্রশ্ন ওঠে, একই দেহের দুটি ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এত বড় ফারাক এল কী করে? মৃত্যুর আসল কারণ ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট’ নাকি ‘আঘাত’, সেই ধোঁয়াশা ঘনীভূত হয়। পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতেই তদন্তের দায়িত্ব সিআইডির হাতে যায়।
নতুন মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট (Calcutta High Court)
এবার হাই কোর্ট (Calcutta High Court) জানিয়েছে, নতুন মেডিকেল বোর্ড গঠন করে, এসএসকেএমের দ্বিতীয় রিপোর্টে যে যে আঘাতের কথা বলা হয়েছে, তার বিশদ ব্যাখ্যা দিতে হবে। একই সঙ্গে বোর্ডকে জানাতে হবে, কোন কোন আঘাত মৃত্যুর কারণ হতে পারে। গোটা রিপোর্ট নিয়েও পূর্ণাঙ্গ মতামত জমা দিতে হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরকে।
আরও পড়ুনঃ ফাঁসির সাজা থেকে মুক্তি, ৭ বছর পর তন্ত্রসাধনায় নরবলি মামলায় অভিযুক্তদের বেকসুর করল হাইকোর্ট
খেজুরির দুই যুবকের মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাপানউতর চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ঘটনাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃত্যু বলে চাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। হাই কোর্টের (Calcutta High Court) কড়া নির্দেশে এবার নতুন করে গতি পেল তদন্ত। এখন নজর থাকবে, নতুন মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে কী উঠে আসে সেই দিকে।