বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মার্চের শুরুতেই তেতে উঠেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) ক্যাম্পাস। ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। পাল্টা তাঁর গাড়িতে এক পড়ুয়াকে পিষে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় যাদবপুরে পুলিশ ক্যাম্প বসানোর আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। এবার তার প্রেক্ষিতেই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ।
কী নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
জানা যাচ্ছে, এদিন ওই মামলায় পরোক্ষভাবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও ওয়েবকুপার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে উচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় যদি জানা ছিল, তাহলে কেন রাজনৈতিক নেতা সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন? এটার প্রভাব পড়বে জানা সত্ত্বেও তিনি কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন সেটা আদালতের কাছে পরিষ্কার নয়’।
এর প্রেক্ষিতে রাজ্যের আইনজীবী তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বলেন, ‘যাদবপুরে গুণ্ডা রাজ চলছে। ২০১৪ পর শ্লীলতাহানির মামলা রুজু হয়েছিল। একাধিক এফআইআর হয়। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি’। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি! খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট! জোর শোরগোল
কল্যাণ (Kalyan Banerjee) বলেন, ‘বশ মানে না এই রকম ঘোড়া ছুটে বেড়াচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা নির্দেশ দেবেন মাথা পেতে নেব, শুধু শান্তি চাই। বিশ্ববিদ্যালয় কিছু করছে না। আমরা নিরুপায়’।
এদিকে রাজ্যের তরফ থেকে যাদবপুর নিয়ে একাধিক প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনগুলি প্রয়োগ করা হয়েছে? এদিন রাজ্যের কাছে সেই বিষয়ে জানতে চান প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম (Justice TS Sivagnanam)। সেই সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে হাইকোর্ট প্রশ্ন করে, ‘বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের কোনও ক্ষমতা থাকে না। তাঁদের হাতে কোনও অস্ত্র থাকে না। তাহলে আপনারা রাজ্যের পুলিশের সাহায্য কেন নিতে চান না?’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী ঋজু ঘোষাল জানান, সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে অর্থের জন্য ইতিমধ্যেই উচ্চ শিক্ষা দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এরপরেই বেশ কিছু নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালত জানায়, ‘দরকার পড়লে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করুন। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নন, তাঁদের আগে বের করতে হবে’। একইসঙ্গে উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘যাদবপুরে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা গুরুত্বপূর্ণ কাউকে নিয়ে কোনও মিটিং, সেমিনার করা যাবে না’।