বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতার রাস্তায় ২১ জুলাইয়ের জনস্রোতের আঁচ আগে থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছে। তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে ধর্মতলায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েতের সম্ভাবনায় চিন্তায় হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ একের পর এক প্রশ্নে প্রশাসনকে ঘিরে ধরেন। বলেন, “সভা করতেই পারেন। কিন্তু জনগণ আর কতটা সহ্য করবে?” এই মন্তব্য ঘিরে চাপ বাড়ল রাজ্য সরকারের উপরেও।
সভার অনুমতি নিয়ে নয়, উদ্বেগ যানজট নিয়ে
রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল (Advocate General) যুক্তি দেন, সভার জন্য সমস্ত নিয়ম মেনেই অনুমতি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির সফর হলেও একই ট্র্যাফিক বিধিনিষেধ থাকে।” কিন্তু আদালত সন্তুষ্ট হয়নি। বিচারপতি স্পষ্ট প্রশ্ন তোলেন, “কলকাতার পুলিশ কমিশনার (Commissioner of Police) কি লিখিত মুচলেকা দেবেন যে কোনও যানজট হবে না?”
কিছু বিধিনিষেধ আরোপের নির্দেশ
আদালতের (Calcutta High Court) বক্তব্য, সভা আটকানো হবে না। কিন্তু জনগণের সুবিধা-অসুবিধা দেখতে হবে। তাই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে:
- সকাল ১১টার আগে শহরে সভার জন্য কেউ ঢুকতে পারবেন না
- যাঁরা আগে থেকেই শহরে, তাঁরাই সভায় অংশ নিতে পারবেন
- রাস্তার এক-তৃতীয়াংশ সবসময় খোলা রাখতে হবে
এইসব শর্ত কার্যকর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) ও রাজ্য সরকারকে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ এত বড় সভা শহরের মাঝখানে না করে স্টেডিয়ামের মতো বড় পরিকাঠামোয় করলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কম হয়। বিচারপতির বক্তব্য, “এক লক্ষ মানুষের জায়গা হয়, এমন কোনও স্টেডিয়াম কেন ব্যবহার করা যাবে না? রাস্তা তো সকলের।”
আরও পড়ুনঃ ব্লক অফিসে রাজস্ব দুর্নীতির অভিযোগে নড়েচড়ে বসল নবান্ন, তদন্তের নির্দেশ অর্থ দফতরকে
মামলাকারী সংগঠনের অভিযোগ, শুধুমাত্র এক রাজনৈতিক দলকে নিয়মের বাইরে গিয়ে বারবার অনুমতি দেওয়া হয়। অন্যদিকে রাজ্যের বক্তব্য, দুর্গাপুজো বা ব্রিগেডেও ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ থাকে। আগামীতে এমন কর্মসূচির জন্য স্থায়ী নীতিমালা (Policy) তৈরি করতে বলেছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে শুক্রবার। আদালত (Calcutta High Court) জানিয়েছে, পুলিশ কমিশনার কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তার বিস্তারিত রিপোর্ট চাই। পাশাপাশি সভার দিন শহরে কী ধরনের বিকল্প ট্র্যাফিক প্ল্যান থাকবে, তাও জানাতে বলা হয়েছে।