বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগে আগের একাধিক মামলা এখনও হাই কোর্টে বিচারাধীন। এর মধ্যেই ২০২৫ সালের দ্বিতীয় এসএলএসটি পরীক্ষার ভুল প্রশ্ন ও অ্যানসার কি নিয়ে নতুন করে বিপাকে পড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশন। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) এই মামলার শুনানিতে কমিশনের ভূমিকা এবং বিশেষ করে এক্সপার্ট কমিটির নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে কড়া প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
মামলার সূত্রপাত কী নিয়ে?
একাদশ-দ্বাদশ এবং নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার অ্যানসার কি নিয়েই এই মামলার সূত্রপাত। অভিযোগ প্রথমে এসএসসি যে অ্যানসার কি প্রকাশ করেছিল, সেখানে একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর হিসেবে ধরা হয়েছিল ‘D’ অপশন। কিন্তু পরে ফাইনাল অ্যানসার কি প্রকাশ হলে দেখা যায় ‘D’ বাদ, সেখানে ‘B’ এবং ‘C’ দু’টোকেই সঠিক বলা হয়েছে। কোনও নোটিশ বা ব্যাখ্যা না দিয়েই উত্তর পরিবর্তন করায় ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হন। তাদের দাবি, এই পরিবর্তনের ফলে অনেক যোগ্য প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
হাই কোর্টে (Calcutta High Court) অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে SSC
শুনানির সময় বিচারপতি অমৃতা সিনহা স্পষ্টই কমিশনের এক্সপার্ট কমিটির ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন “এক্সপার্টরা নিজেরাই যদি স্থির হতে না পারেন, আদালত বা পরীক্ষার্থীরা কীভাবে বুঝবে কোনটা সঠিক উত্তর?” বিচারপতির বলেন, একেকজন প্রফেসর একেক রকম মত দিচ্ছেন। ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক এবং এতে কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
পিটিশনারের দাবি, পরীক্ষার্থীরা প্রাথমিক অ্যানসার কির ভিত্তিতেই ‘D’ অপশনকে সঠিক ধরে নিয়েছিলেন।কোনো কারেকশন উইন্ডো না দিয়েই ফাইনাল অ্যানসার কিতে উত্তর বদলে দেওয়া হয়েছে, যা একেবারেই অনুচিত।
এক্ষেত্রে এসএসসির আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রথমে একটি উত্তর ভাবা হলেও পরে এক্সপার্ট কমিটির মতামত অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বদলানো হয়েছে। এটি কোনো মনগড়া সিদ্ধান্ত নয়, সম্পূর্ণই বিশেষজ্ঞদের মত।
ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য SSC, বলল হাই কোর্ট
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত (Calcutta High Court) একাধিক নির্দেশ দেয়। সেগুলি হল –
- কেন এবং কীভাবে উত্তর পাল্টানো হল, এর পুরো বিস্তারিত হলফনামা জমা দিতে হবে SSC-কেই
- কমিশনের তরফে দাবি করা হয়, কেবল কাট-অফ পেরোনো পরীক্ষার্থীদেরই এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার অধিকার থাকা উচিত। বিচারপতি বিষয়টি অর্ডারে নথিভুক্ত করেন।
- আদালত স্পষ্ট জানায় মামলা চললেও পিটিশনারদের ভেরিফিকেশন বা ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া বন্ধ করা যাবে না। যদি শেষ পর্যন্ত তাদের দাবি সঠিক প্রমাণিত হয়, তবে তারা প্রাপ্য নম্বর পাবেন।

আরও পড়ুনঃ ভোটের আগে বড়সড় রদবদল! একাধিক জেলায় নতুন SP পাঠাল নবান্ন
মামলাটি এখনও বিচারাধীন। কমিশন হলফনামায় কী ব্যাখ্যা দেয়, তার উপরই নির্ভর করছে মামলার পরবর্তী মোড়।
বিচারপতি পরিষ্কার জানিয়েছেন আদালতের (Calcutta High Court) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত SSC কে মেনে নিতেই হবে।












