বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আবারও নতুন করে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। প্রাথমিক থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন, সব ক’টি মামলাই এখন সিবিআই এবং ইডির হাতে। কিন্তু তদন্তের শেষ কবে হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেন বিচারপতি। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার প্যানেল প্রকাশের পদ্ধতি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুললেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে আদালতের (Calcutta High Court) যুক্তি
হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী সরাসরি বলেন, “এই তদন্ত কবে শেষ হবে, সেটা আমরা কেউই জানি না।” তাঁর মন্তব্য, তদন্ত শেষ হলে তবেই স্পষ্ট হবে কারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এবং কারা কেবলমাত্র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুবাদে সুবিধাভোগী। মামলাকারীর আইনজীবী কুমারজ্যোতি তিওয়ারিকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কীভাবে প্রমাণ করা সম্ভব যে সকল অংশগ্রহণকারীরা দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন? উত্তরে আইনজীবী বলেন, “এরা সুবিধাভোগী।”
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিয়ম মেনে প্যানেল প্রকাশ করা হয়নি। মামলাকারীর আইনজীবী সৌম্য মজুমদার আদালতে জানান, বিধি অনুযায়ী আলাদা পদ্ধতিতে প্যানেল প্রকাশ করা উচিত ছিল। তবে পর্ষদের আইনজীবীর দাবি, বিধিতে প্যানেল প্রকাশ নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলা নেই। শুনে বিচারপতি বলেন, “তার মানে পর্ষদ নিজের পছন্দ অনুযায়ী পদ্ধতিতে প্যানেল প্রকাশ করতে পারে।” এরপর আবারও প্রশ্ন ওঠে প্রশিক্ষিত এবং অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের আলাদা তালিকা না করলে কীভাবে অগ্রাধিকার ঠিক হবে?
তবে, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, যদি এখন ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর চাকরি বাতিল হয়, তাহলে বাকি প্রার্থীদের কি রাখা হবে? কারণ, তারাও তো একই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ। তাছাড়া চাকরি হওয়ার পর প্রায় ৫ বছর হয়ে গেছে। যদি মামলা চলতেই থাকে, তাহলে তারা ৭ বছর পূর্ণ করবে আর গ্র্যাচুইটির দাবিও উঠবে। এর সমাধান কী হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি।
আরও পড়ুনঃ ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ, সেনার ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে FIR কলকাতা পুলিশের
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতের (Calcutta High Court) এদিনের পর্যবেক্ষণ আরও একবার বড় অনিশ্চয়তা তৈরি করল। তদন্ত কবে শেষ হবে, প্যানেল কীভাবে প্রকাশিত হয়েছিল, কিংবা চাকরিপ্রাপ্তদের ভবিষ্যৎ, সব কিছুই এখন প্রশ্নচিহ্নে আবদ্ধ। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।