‘প্রমাণ চাই না, এবার সরাসরি সাজা’, ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি, থরহরিকম্প রাজ্যে

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালি (Sandeshkhali) ইস্যুতে ক্রমশ চড়ছে পারদ। অভিযোগের তীর ছোড়াছুড়ি চলছে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে। ওদিকে আদালতে চলছে একের পর এক মামলা। সোমবার সন্দেশখালি ইস্যুতে ফের কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। দীর্ঘদিন এত অভিযোগ জমা পড়ার পরও কেন কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ? প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের (Chief Justice Division Bench) প্রশ্নের মুখে রাজ্য।

গত চার বছর ধরে লাগাতার এত অভিযোগ। তাও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নে রাজ্যের জবাব, পদক্ষেপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ‘বেদখল’ হয়ে যাওয়া জমি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার। বিস্মিত হয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘তার মানে তো নিশ্চই কিছু একটা ঘটেছে। আর প্রমাণের কী দরকার আছে! এবার সরাসরি সাজা দিতে হবে।’’

গতকাল সন্দেশখালি মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী আদালতে জানান, গত ৪ বছরে সন্দেশখালিতে মোট ৪৩টি এফআইআর জমা পড়েছে। যার মধ্যে ৪২টিতে চার্জশিট হয়েছে। সাতটি জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যেই ধর্ষণের ধারাও যুক্ত হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। তবে এসব মামলার ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি বলেই জানান রাজ্যের আইনজীবী। এরপরই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য।

প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, ‘‘৪২টা মামলার চার্জশিট দিতে চার বছর লেগে গেল?’’ চার্জশিট খতিয়ে দেখা হবে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। প্রসঙ্গত, সন্দেশখালি ইস্যুতে বারেবারে মুখ পুড়েছে রাজ্যের। আদালতেও প্রশ্নেও মুখে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা। চাপের মুখে পড়ে রাজ্যের পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও সংবাদমাধ্যমের সামনে স্পষ্ট স্বীকার করে বলেন, ‘‘মানছি তো, ভুল হয়েছে…।’’

সোমবার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী আদালতে জানান, একাধিক ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত নতুন করে সন্দেশখালিতে মোট ২৪টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ts hc high court bjp tmc

আরও পড়ুন: মোদীর বঙ্গ সফরেই তৃণমূল ছেড়ে BJP-তে যাচ্ছেন মেদিনীপুরের এই হেভিওয়েট সাংসদ? তুঙ্গে জল্পনা

প্রসঙ্গত, গত ৫ই জানুয়ারি থেকে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। ওই দিন রেশন দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের অনুগামীদের হাতে মার খেয়ে ফিরতে হয়েছিল ইডি আধিকারিকদের। সেই দিন থেকে যেই আগুন জ্বলছে তা আর নেভার নাম নেই। গত দুমাসে সন্দেশখালির দুই ভিন্ন চিত্র দেখেছে বাংলা। শেখ শাহজাহানের পক্ষে রাস্তায় নামা থেকে ওই একই ব্যক্তির গ্রেফতারির দাবিতে এখন ফুঁসছেন সন্দেশখালির মানুষজন।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর