বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গ্র্যাচুইটি ও অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। সেগুলি দিতেই হবে। এবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। সম্প্রতি একটি মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল (Justice Shampa Dutt Paul)। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।
কোন মামলায় এই নির্দেশ দিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৯৭৮ সালে একটি চটকলে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত হন দু’জন ব্যক্তি। টানা ৩৭ বছর ধরে সেখানে কাজ করেছিলেন। ২০১৫ সালের অবসর নেন। এরপর ওই দুই শ্রমিক গ্র্যাচুইটির জন্য আবেদন জানালেও চটকল কর্তৃপক্ষ তা দিতে রাজি হয়নি। পরের বছর শ্রমিক আইনি সহায়তা কেন্দ্রের সহায়তায় গ্র্যাচুইটি (Gratuity) নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন দু’জন।
শ্রম দফতরের তরফ থেকে ওই দুই অস্থায়ী চটকল শ্রমিকের পক্ষেই নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট চটকলকে গ্র্যাচুইটি স্বরূপ ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা ও অবসরের সময় থেকে ওই অর্থের ওপর সুদ শ্রমিকদের দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছর শ্রম দফতরের যুগ্ম কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনার এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। আইনজীবী উদ্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভ্রকান্তি সামন্ত এমনটাই জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ কাশ্মীরে খতম ৩ জঙ্গি! উপত্যকায় গুলির লড়াই, বড়সড় সাফল্য পেল নিরাপত্তা বাহিনী
যদিও এই নির্দেশ মানতে চায়নি চটকল কর্তৃপক্ষ। তারা এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে বলেন, গ্র্যাচুইটির নিয়ম অনুসারে প্রয়োজনীয় একটানা ৫ বছর, প্রত্যেক বছর কমপক্ষে ২৪০ দিনের কর্মধারা নেই ওই দুই শ্রমিকের। যদিও এর পক্ষে কোনও নথি দেখাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
এরপরেই হাইকোর্ট জানায়, তিন দশকের অধিক সময় ধরে কাজ করা শ্রমিকদের প্রাপ্য গ্র্যাচুইটি থেকে বঞ্চিত করা যায় না। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নিজের কর্মজীবনের সম্পূর্ণ সময় সংশ্লিষ্ট সংস্থায় কাজ করেছেন যে শ্রমিক, তাঁকে গ্র্যাচুইটি ও অবসরকালীন সুবিধা দিতে হবে। চটকল সংস্থার আবেদন খারিজ করে আদালত জানিয়েছে, দীর্ঘ ৩৭ বছরের কর্মজীবনের পর শ্রমিকদের সঙ্গে ওই সংস্থার এহেন আচরণ যদি উপেক্ষা করা হয়, তাহলে তা আইনের অপব্যবহার করা হবে।
অর্থাৎ হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি সংশ্লিষ্ট চটকল সংস্থার। তাদের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। ওই দুই শ্রমিককে গ্র্যাচুইটি ও অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা দিতেই হবে, স্পষ্ট জানিয়েছেন বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল।