বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা নিয়ে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। হঠাৎ করেই এক রাতের মধ্যে ৩০০-র বেশি প্রাণী রেকর্ড থেকে উধাও! এর মধ্যে রয়েছে একাধিক বিপন্ন প্রজাতি। শুধু তাই নয়, গত এক দশকের হিসাব ঘেঁটে দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে প্রাণী তালিকায় বড়সড় গরমিল রয়েছে। এই নিয়েই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘স্বজন’ কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জনস্বার্থ মামলা করেছে।
হাইকোর্টে (Calcutta High Court) কী জানাল সেন্ট্রাল জু অথরিটি
বুধবার মামলার শুনানিতে সেন্ট্রাল জু অথরিটি (CZA)-র পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। জুলাই মাসে তিন সদস্যের একটি বিশেষ দল চিড়িয়াখানায় গিয়ে অডিট করেছে। প্রাণী তালিকা, প্রাণী স্থানান্তরের নথি, এবং পুরনো রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে এই রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।
মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে (Calcutta High Court) আরও গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি শহরের বুকে অবস্থিত আলিপুর চিড়িয়াখানার জমি বিক্রির চেষ্টা চলছে, যা বন আইনের পরিপন্থী। একবার জমি বিক্রির জন্য টেন্ডার ডাকা হলেও সাড়া মেলেনি, পরে ফের টেন্ডার ডাকা হয়েছে। এই কারণে প্রাণী উধাও হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জমি বিক্রির পরিকল্পনার যোগ থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রাণী সংখ্যার হিসেবে গরমিল
পিটিশনে বলা হয়েছে-
- ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের শেষে চিড়িয়াখানায় প্রাণী ছিল ৬৭২টি, কিন্তু নতুন অর্থবর্ষের প্রথম দিনে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫১-এ। অর্থাৎ এক রাতেই ৩২১ প্রাণী রেকর্ড থেকে উধাও হয়ে যায়।
- ২০১১ সালে প্রাণী সংখ্যা ছিল ১,৪৫২; ২০২৪ সালের মার্চে তা নেমে এসেছে ৬৭২-এ।
- ২০১৭ সালের মার্চের শেষ দিনে প্রাণী ছিল ১,১৮৬, কিন্তু পরের দিন সকালেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৯১০। অর্থাৎ এক রাতেই হারিয়ে যায় ২৭৬ প্রাণী।
- ২০২২ সালে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা ছিল ১৯০, কিন্তু পরের বছরের প্রথম দিনে তা কমে দাঁড়ায় ১৩১। ৫৯টি বিপন্ন প্রাণী হারানোর কোনো ব্যাখ্যা নেই।
এই ঘটনার মাঝেই আলিপুর চিড়িয়াখানার পরিচালক অরুণ মুখোপাধ্যায়কে বদলি করে পাঠানো হয়েছে দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিক্যাল পার্কে। বন দফতর বলছে, এটি রুটিন বদলি। তবে মামলাকারীরা মনে করছেন, এই বদলির সঙ্গে তদন্তের যোগ থাকতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ‘পদত্যাগ করতে প্রস্তুত’, ভোটার বৃদ্ধি বিতর্কে অনুরাগকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
হাইকোর্ট (Calcutta High Court) জানিয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট আসার পর ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। আদালত নজরে রেখেছে প্রাণী তালিকার এই গরমিল ও জমি বিক্রির অভিযোগ যা মিলিয়ে এখন আলিপুর চিড়িয়াখানার ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।