বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়ম মানা হয়নি। তাই মেলেনি বেতন। তিন বছরের অনুপস্থিতির পর কাজে ফিরলেও মেডিক্যাল ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ায় এক শিক্ষকের অনুপস্থিতির সময়ের বেতন অনুমোদন করেনি স্কুল। কিন্তু ওই শিক্ষক মধ্যশিক্ষা পর্ষদে আবেদন জানালে পর্ষদ স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাঁকে সবেতন ছুটি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকেই মান্যতা দিল।
দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক
পশ্চিম বর্ধমান জেলার বারাবনির পুচরা ভগবান মহাবীর দিগম্বর জৈন সড়াক উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক উৎসবমুখর সরকার ২০১১ সালের ২১ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ১ জুন পর্যন্ত স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না। ২ জুন কাজে যোগ দেওয়ার সময়ে তিনি দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান। তবে নিয়ম অনুযায়ী মেডিক্যাল ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দেননি তিনি।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ উপাধ্যায় জানান, শিক্ষককে পুনরায় কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও, প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় সবেতন ছুটি অনুমোদন করা হয়নি।
স্কুলের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে উৎসবমুখর সরকার প্রথমে জেলা ও রাজ্য স্তরের শিক্ষা দপ্তরে আবেদন করে সবেতন ছুটির দাবি জানান। জেলা স্কুলশিক্ষা দপ্তরের তরফে তাঁকে সবেতন ছুটি অনুমোদনের নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক সেই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করলে, তাঁকে তলব করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। অভিজিৎ উপাধ্যায় বলেন, “আমি সমস্ত প্রমাণ-সহ আমার বক্তব্য পর্ষদে জমা করি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পর্ষদের পক্ষ থেকে লিখিত নির্দেশ আসে, ওই শিক্ষককে যেন সবেতন ছুটি অনুমোদন করা হয়।”
আদালতের (Calcutta High Court) পথে স্কুল কর্তৃপক্ষ
পর্ষদের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিষয়টি আদালতের দারস্থ করা হয়। মামলা ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। আদালতের (Calcutta High Court) রায়ে শেষ পর্যন্ত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ খারিজ করে দেওয়া হয়, এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। অভিজিৎ উপাধ্যায় বলেন, “বিচারপতি অমৃতা সিনহা স্পষ্ট জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী মেডিক্যাল ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ায় স্কুলের সিদ্ধান্ত সঠিক। আদালতের এই রায় আমাদের ন্যায়বিচার দিয়েছে।”

অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক উৎসবমুখর সরকারের বক্তব্য, “একপেশে রায়। আমার দিকটি সম্পূর্ণ উপেক্ষিত হয়েছে।” তবে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রায় কার্যকর হওয়ার ফলে আপাতত স্কুল কর্তৃপক্ষেরই জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে এই মামলাকে।












