বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষকদের আদর্শ আচরণ কেমন হওয়া উচিত? সম্প্রতি একটি মামলায় জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কেমন আচরণ মেনে চলতে হবে, সেটি পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন হাই কোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি শম্পা দত্ত (পাল)। সেই সঙ্গেই যে কোনও বিষয়ে রাজনীতি না টেনে আনার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের (Teacher) আদর্শ আচরণের মধ্যে পড়ুয়াদের সম্মান, যোগ্যতা, পেশাদারিত্ব, সততা, পারস্পরিক সহযোগিতা, ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতা, প্রাতিষ্ঠানিক নীতি মেনে চলা সহ বেশ কিছু কথা বলা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শিক্ষার সহায়ক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, শিক্ষার্থীদের সম্মান এবং মর্যাদা দিতে হবে, শিক্ষা বিষয়ক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সৎ থাকার কথা বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গেই পড়ুয়াদের কাজ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন করা এবং গঠনমূলক সমালোচনার কথাও বলেছে হাই কোর্ট। সব মিলিয়ে, শিক্ষকদের আদর্শ আচরণ কেমন হওয়া উচিত, সেই বিষয়ে মোটামুটি একটা ধারণা দিয়ে দিয়েছে আদালত। হুগলির উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ একজন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলা খারিজ করে এই পরামর্শ দিয়েছে হাই কোর্ট।
আরও পড়ুনঃ সভায় উপস্থিত শিশুদের ‘লাওয়ারিশ’ তকমা? ফের বেফাঁস মহুয়া, তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি!
এই প্রসঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, শিক্ষা প্রদানের যে প্রাথমিক উদ্দেশ্য রাজনৈতিক প্রভাবে সেটিকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়। এটি ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক একটি বিষয়। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের প্রতিকূল পরিবেশ থাকলে সেটি ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার পক্ষে আদর্শ নয়।
এই মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের তরফ থেকে বলা হয়, ২০১৫ সালে হুগলি উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পর থেকে আবেদনকারী ওই শিক্ষিকার নামে বেশ কিছু কাল্পনিক ষড়যন্ত্র নিয়ে মিথ্যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে হুগলি উইমেন্স কলেজে আবেদনকারী একটি প্রকাশ্য সাক্ষাৎকার কলেজের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনাও করেন।
কলেজের অধ্যক্ষের দাবি, ওই সাক্ষাৎকারটি ওই বছরেরই আগস্ট মাসে একটি নামী সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়। সেখানে কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আবেদনকারী সমালোচনা করেন এবং অভিযোগকারী শিক্ষক ও প্রিয়াঙ্কা অধিকারীর নাম নেন। প্রিয়াঙ্কা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক ও কলেজের তৃণমূল ছাত্র সংসদের সম্পাদক। কলেজের মধ্যে হওয়া নানান অবৈধ কাজের মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তাঁর নাম নেওয়া হয় বলে খবর।
এই মামলার সকল তথ্য দেখার পর আদালতের তরফ থেকে বলা হয়, ‘এই মামলায় লিখিত অভিযোগে বর্ণনা করা তথ্যগুলি ৪৯৯ ধারার অধীন নির্ধারিত নবম ব্যতিক্রমের অধীন পড়ে এবং এভাবে ৫০০ ধারার অধীন অভিযুক্ত অপরাধ তৈরির জন্য দরকারি উপাদান এই মামলায় পরিষ্কার অনুপস্থিত। এরপর উচ্চ আদালতের তরফ থেকে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়।