বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ডিভোর্সের আইনি মামলায় সন্তানকে হাতিয়ার করা যায় না। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) একটি ডিভোর্সের মামলায় এমনটাই জানিয়েছে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতে ডিভোর্স নিয়ে আইনি লড়াই চলছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। সেই মামলার শুনানিতেই আদালত জানিয়ে দিয়েছে ডিভোর্সের মামলায় সন্তানকে ‘দাবার বোরে’ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এটা বন্ধ না করলে বাচ্চাকে সোজা বাবার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
ডিভোর্স মামলায় মাকে সতর্ক করল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)
আদালত (Calcutta High Court) নিয়োজিত স্পেশাল অফিসার এদিন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও শুভেন্দু সামন্তকে জানিয়েছেন ওই বাচ্চাটির মধ্যে কিছু ট্রমার লক্ষণ দেখা গিয়েছে। এরপরেই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য মহিলার আইনজীবীকে বলেন ডিভোর্সের সুবিধা পাওয়ার জন্য তার মক্কেল বাচ্চাকে ব্যবহার করতে পারবেন না। রীতিমত ভর্ৎসনা করেই জাস্টিস ভট্টাচার্য এদিন বলেন, ‘এইভাবে ব্ল্যাকমেইল করা যায় না। যতক্ষণ তিনি স্বামীর কাছে ফিরে যাচ্ছেন না ততক্ষণ পর্যন্ত বাচ্চাটি বাবার কাছে যেতে পারবে না? এত বড় সাহস তাঁর! কে তিনি?’
ডিভোর্সের এই মামলায় আদালত (Calcutta High Court) জানিয়েছে বাচ্চার কল্যাণ তখনই হবে যখন সে বাবা-মা দুজনের সঙ্গে একটা ভারসাম্যমূলক যোগাযোগ রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে অন্তত সীমিত সময়ের জন্য বাচ্চাটিকে কেন তার বাবার কাছে পাঠানো হবে না? তার কোন কারণ-ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ওই মহিলাকে আগামী ১৩ ই জানুয়ারির মধ্যে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার শেষ সুযোগ দিয়েছে আদালত।
দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানিয়ে দিয়েছে শিশুকে প্রত্যেকদিন সন্ধ্যায় দু’ঘন্টার জন্য বাবার কাছে নিয়ে যেতে হবে। ওই সময় বাবা-মেয়ের মাঝে মা উপস্থিত থাকতে পারবে না। আগামী ১২ই জানুয়ারী পর্যন্ত এটা করতে হবে। সন্ধ্যা ছটা থেকে আটটা পর্যন্ত শিশুটি বাবার কাছে থাকবে। শুধুমাত্র সন্তানকে বাবার কাছে আনার সময় মা-মেয়ের কাছে থাকবেন।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতার বদলে একি কাণ্ড! রাজ্য সরকারের প্রকল্প নিয়ে হৈচৈ
অতীতের একটি ঘটনা প্রসঙ্গে আদালত নিয়োজিত স্পেশাল অফিসার এদিন জানিয়েছেন ওই শিশু কন্যা তার বাবার কাছে যেতে চাইত না। অফিসার জানান শিশুটির মা সবসময় তাকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করতো, বাবার কাছে তার যাওয়া উচিত নয়। একসময় অফিসারের হাতেও কামড়ে দিয়েছিল ওই শিশু। আসলে শিশুটি আসলে কামড়াতে চায়নি। সে যে তার বাবার কাছে যেতে চায় না, তা বোঝাতেই নাকি এই ভাবে সে নিজের ভয়টা প্রকাশ করতে চেয়েছিল।
অফিসার এদিন আরও জানিয়েছেন, গত ২৬ ডিসেম্বর অভিযোগকারী মা শিশুকে নিয়ে তার বাবার বিল্ডিং এর দরজার সামনে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ঝামেলা করে এসেছিলেন। সেই সময় তিনি ওই অফিসারকে চিহ্নিত করেছিলেন যে তিনি বাচ্চাকে নিয়ে চলে যাচ্ছেন।