Ekchokho.com 🇮🇳

‘এখনই কোনও পদক্ষেপ নয়..,’ আদালতে বড় ‘স্বস্তি’ কার্তিক মহারাজের! আইনের পথেই হাঁটছে রাজ্যও

Published on:

Published on:

Court says no action on Karthik Maharaj till Thursday

বাংলা হান্ট ডেস্ক : ধর্মীয় জীবন যাপন, সমাজসেবা আর মানবকল্যাণের চেষ্টার মাঝে হঠাৎই এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজ (Karthik Maharaj)। এক প্রাক্তন কর্মীর পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠে আসার পর রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়লেও, মহারাজ (Karthik Maharaj) নিজের অবস্থানে অনড়। সংবাদমাধ্যমের সামনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, সত্যেরই জয় হবে।”

২০১৩ সালের একটি পুরনো ঘটনাকে ঘিরে এই বিতর্কের সূত্রপাত। অভিযোগকারিণী দাবি করেছেন, মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার চাণক্য এলাকার একটি আশ্রম স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি দেওয়ার পর, সেখানে তাঁকে দিনের পর দিন শারীরিকভাবে হেনস্তা (sexual assault) করা হয়েছিল। এমনকি, তাঁর গর্ভপাতও নাকি করানো হয়। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ মহারাজ শুরু থেকেই স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছেন।

আইনের পথেই হাঁটবে রাজ্য, বলল আদালত

বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ওঠে। মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসন এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেবে না। এর মানে, তদন্ত এবং আইনি প্রক্রিয়া নিজের গতি ও নিয়মে চলবে। হাইকোর্টও স্পষ্ট জানিয়েছে, বিষয়টি সংবেদনশীল এবং আইনত যথাযথ আদালতেই শুনানি চলবে।

এক আইনজীবী মামলার ডায়েরি দেখতে চাইলেও বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানান, এই বিষয়ে আবেদন জানাতে হবে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। অর্থাৎ, আইনের পথেই প্রতিটি ধাপ চলছে এবং এখানে কোনও তড়িঘড়ি বা আবেগতাড়িত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না—এটাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

অভিযোগের জবাবে মর্যাদা রেখে শান্ত কণ্ঠেই কথা মহারাজের

অভিযোগের জবাবে কার্তিক মহারাজ যা বলেছেন, তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর কথায়, “ধর্মকে দুর্বল করার জন্য আমার ভাবমূর্তিকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমি আইনের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখি। বিচারব্যবস্থা যা বলবে, মাথা পেতে নেব। কিন্তু আমি জানি, সত্যের জয় হবেই।” এই শান্ত কণ্ঠই যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে—কোনও গা-জোয়ারি নয়, বরং আইন ও নীতির পথেই তাঁর ভরসা।

আরও পড়ুন : বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি খোদ পুলিশের! কসবা কাণ্ডে জামিন হচ্ছে মূল অভিযুক্তের? সামনে আপডেট

রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনা ঘিরে প্রতিক্রিয়া এলেও, বহু মানুষই বলছেন, ‘প্রমাণ ছাড়া কাউকে দোষী বলা যায় না।’ সন্ন্যাসী জীবনের শুদ্ধতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও জনসেবার ইতিহাসকে অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, “সত্য সামনে আসুক, কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত সমাজ যেন কারও চরিত্রহত্যা না করে।” সবমিলিয়ে, বৃহস্পতিবারের শুনানির দিকে তাকিয়ে রয়েছে সকলে। একজন ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে মানেই তিনি দোষী—এই মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে সমাজ ও বিচারব্যবস্থা যেন নিরপেক্ষ ভাবেই বিষয়টি বিবেচনা করে—এটাই এখন বহু মানুষের আশা।