বাংলা হান্ট ডেস্ক : পূর্ব মেদিনীপুরে (Purba Medinipur) মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে নয়া আতঙ্ক। এবার মাছচাষে ক্ষতির আশঙ্কায় কপালে ভাঁজ পড়েছে চাষীদের। রামনগরের সমুদ্র উপকূলবর্তী মেদিনীপুরে পাওয়া গেছে এই সাকার মাউথ ক্যাটফিশ (Catfish)। মাছটির পুরো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। যার বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস (Hypostomus plecostomus)। এই বিদেশি মাছটিকে সাধারণত অ্যাকোরিয়ামেই দেখা যায়।
যদিও এখন দেশের বিভিন্ন নালা ডোবাতেও দেখা মিলছে এই মাছের। চলতি বর্ষায় হঠাৎ করেই নাকি বংশবিস্তার করেছে এই মাছটি। সাধারণত জলজ পোকামাকড়, শ্যাওলা, ছোট মাছ ও মাছের পোনা খেয়ে জীবন অতিবাহিত করে এই মাছটি। মাছটির পাখনা ভীষণরকম ধারালো হয়। তার ধারালো পাখনার আঘাতে যে ক্ষত সৃষ্টি হয় তা পচে গিয়ে মৃত্যু হয় আক্রান্ত প্রাণীটির।
এই মাছ যে খালবিলের মাছেদের জন্য ভয়ানক তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। পাতের মাছের জন্য সংকট তৈরি করে এই মাছ। গত সোমবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর ১ নম্বর ব্লকের সমুদ্র উপকূলবর্তী পাদিমা এক অঞ্চলের মেদিনীপুর গ্রামে পাওয়া গেছে এই খতরনাক সাকার মাছ। অদ্ভুত দর্শন এমন মাছ দেখে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্থানীয় এলাকায়।
উল্লেখ্য, সাকার মাছ রাক্ষুসে প্রজাতির না হলেও ভয়ানক তো বটেই। এক তো এর খাবারের চাহিদা প্রচুর তার উপর ছোট মাছ, মাছের পোনা খেয়ে থাকে। পাখানার আঘাতও মারাত্মক। যার ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্যের জোগান নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। দেশীয় মাছগুলি এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে চলেছে।
এই প্রসঙ্গে মাছ চাষীদের অভিযোগ, এই সাকার মাছের জেরেই পাতের মাছের উৎপাদন কমেছে। মাছটির বিস্তার এখনই কমাতে না পারলে দেশীয় প্রজাতির মাছ হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মৎস্য গবেষকরাও। খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, এর আগে এই মাছের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে মায়ানমার ও আরব আমিরাতের মৎস্য চাষীরাও। মৎস দফতরের এক আধিকারিক জানায়, ‘এই মাছগুলি সাধারণত অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা হয়। কোনওভাবেই কোনও মাছ পালিয়ে জলাশয়ে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকেই বংশ বিস্তার করে নিজেদের সংখ্যা বাড়িয়েছে।’