‘কাকু’র ‘অত্যাচারে’ অতীষ্ঠ? সুজয়কৃষ্ণকে আর হেফাজতে চাইল না CBI! কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবিতে তোলপাড়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির মামলায় জামিনের পর সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku)। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁকে হেফাজতে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবার হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আজ ফের বিচারভবনে ‘কাকু’র মামলা ওঠে। সেখানে আর তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়নি সিবিআই (CBI)। উল্টে কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, হেফাজতে থাকাকালীন অসহযোগিতা করেছেন সুজয়কৃষ্ণ।

কালীঘাটের কাকুর (Kalighater Kaku) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ সিবিআইয়ের!

এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী ‘কাকু’কে জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন জানান। তিনি বলেন, হেফাজতে থাকাকালীন সহযোগিতা করেননি সুজয়কৃষ্ণ (Sujay Krishna Bhadra)। খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন, ওষুধও খেতে চাইছিলেন না। রক্তে শর্করার মাত্রার সমস্যা তৈরি হয়। সিবিআইয়ের অনুমান, এমনটা চলতে থাকলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য, ‘মেডিক্যাল এমারজেন্সি’ তৈরি করতে চাইছিলেন ‘কাকু’ (Kalighater Kaku)। তাঁরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, উপবাস করলে বহু সমস্যার সমাধান হয়ে যায়, এটা তাঁরা জানেন। সেই কারণে তাঁকে আর হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়নি কেন্দ্রীয় এজেন্সি। বরং তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানানো হয়। অন্যদিকে ফের একবার জামিনের আবেদন জানান সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী।

আরও পড়ুনঃ বায়োমেট্রিক চালু হতেই ‘গায়েব’ ৮০ কর্মী! কোথায় গেল? পুরসভার ঘটনা ফাঁস হতেই হৈচৈ

‘কাকু’র (Kalighater Kaku) আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি নন। কোনও সরকারি দফতরের সঙ্গেও তিনি যুক্ত নন। বিগত দেড় বছর ধরে জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে নিজের জীবন অতিবাহিত করছেন। এই সময়কালে সুজয়কৃষ্ণের পত্নীবিয়োগের কথাও তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবী। বর্তমানে ‘কাকু’ ইডির মামলায় জামিন পেয়েছেন এবং সিবিআই-ও যেহেতু তাঁকে আর হেফাজতে চাইছে না, তাই যে কোনও শর্তে জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী। দরকার হলে জামিন দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

পাল্টা সিবিআইয়ের তরফ থেকে সুজয়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে হেফাজতে থাকাকালীন তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়। তিনি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় চাকরিপ্রার্থীদের নাম, তাঁদের থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে কিছুই বলছেন না। এমনই অভিযোগ এনেছে সিবিআই। একথা শুনে আদালত জিজ্ঞেস করে, কী ধরণের ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ দিচ্ছেন সুজয়কৃষ্ণ? একইসঙ্গে বলা হয়, চাকরিপ্রার্থীদের নাম এবং কত টাকা দিয়েছে সেটা সিবিআই আগে থেকেই জানে। তাই সুজয়কৃষ্ণ সেই তথ্য দেওয়া কিংবা না দেওয়ায় কী যায় আসে।

Kalighater Kaku

কালীঘাটের কাকু জামিন পেলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (Recruitment Scam) তদন্তে কীভাবে প্রভাব পড়তে পারে সেটাও এদিন জানতে চান বিচারক। সিবিআইয়ের তরফ থেকে জানানো হয়, তিনি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় এজেন্সির অনুমান, এই মামলায় বহু সরকারি আধিকারিকের নাম উঠে আসতে পারে। তবে ‘কাকু’ তাঁদের সেই নাম বলছেন না বলে মনে করছে তদন্তকারী সংস্থা।

এদিকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয়কৃষ্ণের (Kalighater Kaku) কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চাইছে সিবিআই। এদিন তারা সেই আর্জিও জানিয়েছে বলে খবর। অন্যদিকে সিবিআই ‘কাকু’কে হেফাজতে না চাওয়ায় তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর