বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে (Municipality Recruitment Scam) ফের একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে পাওয়া তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েক জন রাজনৈতিক নেতানেত্রীর ঘনিষ্ঠ পরিচিত এমনকি এক প্রভাবশালী নেতার পুত্রও চাকরি পেয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, সেই তথ্যও থাকতে পারে নতুন চার্জশিটে।
অয়ন শীলের অফিস থেকে শুরু দুর্নীতির (Municipality Recruitment Scam) হদিস
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রথমেই গ্রেপ্তার হন ব্যবসায়ী অয়ন শীল। তাঁর সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়েই হাতে আসে একগুচ্ছ ওএমআর শিট। তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, স্কুল নয়, পুরসভা নিয়োগেও চলেছে একই দুর্নীতি (Municipality Recruitment Scam)। অয়নের সংস্থাই ছিল পুর নিয়োগের ওএমআরের দায়িত্বে। তারপর থেকেই শুরু হয় অভিযান। একে একে গ্রেপ্তার হন একাধিক মধ্যস্থতাকারী ও পুরকর্মী।
১৬ পুরসভায় বেআইনি নিয়োগ ও টাকার বিনিময়ে চাকরি
গত বছর প্রথম চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছিল, কলকাতা-সহ অন্তত ১৬টি পুরসভায় অয়নের সংস্থার মাধ্যমে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে (Municipality Recruitment Scam)। গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে নেওয়া হত প্রতিটি নিয়োগের জন্য।
তদন্তে উঠে এসেছে অয়নের দুই এজেন্ট শমীক চৌধুরী ও দেবেশ চক্রবর্তীর নাম। জানা গিয়েছে এই দুর্নীতির মূল চরিত্র ছিলেন এরাই। শমীক ১০-১২ জনকে আর দেবেশ চক্রবর্তীর ওরফে কানুদা অন্তত ১৪ জনকে চাকরি পাইয়ে দেন অর্থের বিনিময়ে। সিবিআই-এর দাবি, এভাবে মোট ১৮২৯ জন চাকরি পেয়েছেন বেআইনি ভাবে। তাঁদেরও একে একে তলব করা হচ্ছে বলে খবর।
তদন্তে উঠে এসেছে, চাকরিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক নেতার আত্মীয়। সেই সূত্রেই এক প্রভাবশালী নেতার পুত্রকে জেরা করেছে সিবিআই। মনে করা হচ্ছে, আসন্ন চার্জশিটে তাঁর নামসহ আরও প্রভাবশালী পরিবার-ঘনিষ্ঠদের উল্লেখ থাকতে পারে। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতেও যেমন প্রভাবশালী নাম উঠে এসেছিল, তেমনই এবার পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতিতেও (Municipality Recruitment Scam) একই ছায়া দেখতে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
গত বছরের ২০ মার্চ ইডির হাতে ধরা পড়েন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল। তাঁর চুঁচুড়ার বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। এরপর তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেয়। অয়ন বার বার জামিনের আবেদন করলেও, শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে জানায় “ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ গুরুতর। হাজার হাজার যুবকের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়েছে। টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ মারাত্মক।” আদালত সিবিআইকে দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশও দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ত্রিপুরায় পা রাখতেই পুলিশি বাধা! বিমানবন্দরে বসেই ধরনায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল
এখন নজর সিবিআই চার্জশিটে। ওই চার্জশিটে একাধিক প্রভাবশালী পরিবারের নাম, নতুন দুর্নীতির (Municipality Recruitment Scam) কাহিনি এবং পুরসভার ভেতরের যোগসাজশের চিত্র থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, তদন্ত প্রায় শেষের পথে।