বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির পাশাপাশি গরু পাচার মামলা নিয়েও একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসে চলেছে। তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) গ্রেফতারির পর থেকে কোটি কোটি সম্পত্তির হদিশ পাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক বিস্ফোরক তথ্য এসেছে সিবিআইয়ের (CBI) হাতে। সম্প্রতি এই মামলায় অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে (Sukanya Mondal) তলব করে তদন্তকারী অফিসাররা আর এবার গরু পাচার কাণ্ডে বিদেশি মুদ্রার যোগ থাকার সন্দেহে পুনরায় একবার নোটিশ পাঠানো হলো কেষ্টকন্যাকে।
বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই একের পর এক দুর্নীতি মামলায় সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। এসএসসি থেকে প্রাথমিক টেট সহ অন্যান্য একাধিক মামলায় জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতি সেই তালিকায় যুক্ত হয় গরু পাচার মামলা। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর থেকেই উত্তপ্ত হতে থাকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। পরবর্তীতে অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এবং আত্মীয়দের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি পাওয়ার পাশাপাশি বোলপুরে একাধিক জমির খোঁজ পায় সিবিআই আর এবার এই মামলায় বিদেশি মুদ্রার যোগ এলো প্রকাশ্যে।
উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর থেকেই তাঁর নামে একাধিক বেনামি সম্পত্তি পাওয়ার পাশাপাশি সিবিআইয়ের নজরে উঠে আসে অনুব্রত মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নাম। সুকন্যার নামে বিপুল পরিমাণ জমি থাকার পাশাপাশি একাধিক কোম্পানির হদিশ পায় তারা। একজন স্কুল শিক্ষিকা হয়ে কিভাবে তাঁর কাছে এত বিশাল পরিমাণ সম্পত্তি এলো, তা তদন্ত করতে অনুব্রত কন্যাকে দীর্ঘক্ষন জিজ্ঞাসাবাদও করে তদন্তকারী অফিসাররা আর এবার সুকন্যার অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশি মুদ্রা আদান-প্রদানের সন্দেহে ফের একবার নোটিশ পাঠালো সিবিআই।
সূত্রের খবর, অপর একটি নোটিশও পাঠানো হয়েছে কেষ্টকন্যাকে, যেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে তদন্তকারী সংস্থা। উল্লেখ্য, গতকাল অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছে যায় সিবিআইয়ে একটি দল। পরবর্তীতে কেষ্টকন্যাকে ৯১ সিআরপিসি-তে একটি নোটিশ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যবসার পাশাপাশি তাঁর কোম্পানিগুলির তথ্য এবং ব্যাঙ্কের নথি তলব করা হয়েছে। যদিও সিবিআই সূত্রের খবর, আপাতত সুকন্যাকে হাজিরার নির্দেশ প্রদান করা হয়নি।
এক্ষেত্রে তাদের দাবি, বিগত বেশ কিছু সময় ধরে কেষ্টকন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা জমা পড়েছে। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাঙ্ক থেকেও সেই সকল টাকা এবং মুদ্রা পাঠানো হতো বলে খবর। সিবিআইয়ের অনুমান, বাংলাদেশ থেকে গরু পাচার দুর্নীতি সম্পর্কিত টাকা, প্রথমে পরিবর্তিত হতো ডলারে এবং পরবর্তীতে ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে করা হতো আদান প্রদান আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সুকন্যাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
তবে শুধুমাত্র সুকন্যা মণ্ডলই নন, গতকাল অনুব্রত মণ্ডলের রাধুনী জ্যোতির্ময় দাস এবং বোলপুরে ব্যাঙ্কের আধিকারিককেও তলব করে সিবিআই। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের এই তৎপরতা ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ শাসক দল। এদিন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “তদন্তের বিষয় নিয়ে কোন বক্তব্য নেই। যাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে, সে এবং তার আইনজীবী এ প্রসঙ্গে বলবে।”