দেউচা-পচামি খনি বণ্টনে বিরাট দুর্নীতির অভিযোগ! আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপের বিরুদ্ধে CBI তদন্ত

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গত সোমবারই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাজপুর বন্দর নির্মাণের বরাত দেওয়া হবে আদানি শিল্প গোষ্ঠীকে (Adani Group of Industries)। আশ্চর্যজনক ভাবে তার পরদিনই খবর পাওয়া গেল, তিন দশকেরও পুরনো কয়লা খনি বন্টন কাণ্ডে দুর্নীতি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা (Sanjeev Goenka) গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই (CBI)।

আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপকে ওই তিনটি খনি দেওয়া হয় ১৯৯৩-৯৫ সালে। বাংলায় তখন চলছে বাম রাজত্ব। দেউচা পাচামি (Deucha Pachami), মাহান ও দক্ষিণ দাধু কয়লা ব্লক দেওয়া হয়েছিল ওই গ্রুপের হাতে। ঘটনাচক্রে, পশ্চিমবঙ্গের দেউচা পাচামি কয়লা খনি বন্টনের ব্যাপারে বর্তমান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভীষণ আগ্রহী। শিল্প মহল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই খনি নিয়ে আগ্রহ রয়েছে আদানি শিল্পগোষ্ঠীরও।

আরপিজি গ্রুপকে খনি বন্টনের বিষয় নিয়ে ২০১২ সালে মনমোহন সিংহ জমানাতেই সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করে সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন। সিবিআই এরপর তদন্তও শুরু করে। ওই তিনটি খনি দেওয়া হয় আরপিজি ইন্ডাস্ট্রিজ, আরপিজি এন্টারপ্রাইজ এবং কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনকে। কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন বা সিইএসসি আদতে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সংস্থা। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি একটি প্রতিবেদনে জানায়, সিবিআই এবার তদন্ত শুরু করেছে এই বিজনেস ডিল-এর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এনডিটিভি সংস্থার শেয়ার অধিগ্রহণ করেছে আদানি শিল্পগোষ্ঠী।

এনডিটিভির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর জানা গিয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরপিজি ইন্ডাস্ট্রিজ কয়লা মন্ত্রকের কাছে খনির জন্য আবেদন করে। তারপরই সারিসটোলি কয়লা খনি তাদের জন্য নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু ৯৩ সালের নভেম্বর মাসে সিইএসসি কয়লা মন্ত্রকের কাছে আবার আবেদন জানায়, পাশের খনিটিও তাদেরকেই দেওয়া হোক। কারণ হিসাবে দেখানো হয় সারিসটোলিতে কয়লা পরিমাণ বেশি নয়। এর পর সারিসটোলি, তারা ও দেউচা পাচামি (Deucha Pachami) ব্লক চিহ্নিত করা হয় ওই গ্রুপের জন্য।

সিবিআই যে এফআইআর করে সেখানে উল্লেখ করা হয় কোম্পানির মালিকানা নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। সেই তথ্যে বলা হয় আরপিজি ইন্ডাস্ট্রিজ একটি পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করবে। তাই কয়লা মন্ত্রক আরপিজিকে কয়লা খনি বন্টন করে। কিন্তু পরে বদল করা হয় এই তথ্য। সেখানে বলা হয় সিইএসসি পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করবে। এফআইআর-এর বয়ানে আরও বলা হয় ৯৫ সালে আরপিজি এন্টারপ্রাইজ রাজস্থানের ঢোলপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির জন্য মাহান কোল ব্লকের অধিকার পাওয়ার আবেদন করে। কিন্তু সেখানেও উল্লেখ করা হয় দুটি কোম্পানির নামে—আরপিজি এন্টারপ্রাইজ ও সিইএসসি। পরে অবশ্য সিইএসসি রাজস্থান বিদ্যুৎ বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ওই কয়লা খনি বন্টন করা হয় আরপিজি এন্টারপ্রাইজকে।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর