বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অনুব্রত মণ্ডল বনাম CBI! সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গ রাজনীতিতে তৃণমূল নেতা এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সির মধ্যে ‘লুকোচুরি’ খেলা ক্রমশ উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে চলেছে। একদিকে সিবিআই (CBI) একের পর এক সমন পাঠায় বীরভূমের জেলা সভাপতিকে, আবার অপরদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রতিবারই সেই তলব এড়িয়ে যান অনুব্রত। সেই ধারা বজায় রেখে এদিন ফের একবার সিবিআই হাজিরা এড়ালেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা।
এদিন নিজাম প্যালেসে গিয়ে অনুব্রতর অনুপস্থিতির খবর দিয়ে আসেন তাঁর আইনজীবীরা। অসুস্থ থাকার কারণে কলকাতায় আসতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে বলে খবর। তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে জেরা করতে ক্রমশ তৎপর হয়ে উঠছে সিবিআই। সূত্রের খবর, দশম বার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) হাজিরা এড়ানোর বিষয়টি ভালো চোখে দেখছে না তারা এবং ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে CBI।
উল্লেখ্য, গত সোমবার নিজাম প্যালেসে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। তবে সেদিন এসএসকেএম হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করাতে আসলেও পরবর্তীতে সোজা বীরভূমের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তৃণমূল নেতা। পরবর্তীতে তাঁর চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয় সিবিআইকে। যদিও এতে দমে না থেকে পুনরায় একবার এদিন অনুব্রতকে তলব করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসাররা। তবে পুনরায় একবার শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত।
এর মাঝেই আবার গতকাল তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোলপুর সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের পৌঁছে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাধে নতুন বিতর্ক। পরবর্তীতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর দাবি তুলে ধরেন অনুব্রতকে চিকিৎসা করতে আসা এক চিকিৎসক। তিনি জানান, “বোলপুর হাসপাতালের সুপারের নির্দেশেই আমাকে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি যেতে হয়। এরপর ওখানে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখে দিতে বাধ্য হতে হয়। অনুব্রত মণ্ডল প্রথমেই আমাকে বেড রেস্ট-র জন্য লিখতে বলেন।” যদিও পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোন মন্তব্য করা হয়নি আর এর মাঝেই এদিন তৃণমূল নেতার হাজিরা এড়ানোর প্রসঙ্গ নতুন করে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছে।
কি সেই সম্ভাবনা? সূত্রের খবর, এদিন সিবিআইয়ের একটি টিম দ্বিতীয় হুগলি সেতু হয়ে সামনের পথে অগ্রসর হয়ে চলেছে। এক্ষেত্রে তাদের গন্তব্যস্থল প্রসঙ্গে স্পষ্ট ভাবে জানা না গেলেও একটি সূত্রের মতে, আজই আসানসোল আদালতে অনুব্রতর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে। আবার অপরদিকে, সিবিআই অফিসাররা তৃণমূল নেতার বাড়িতে পৌঁছে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে। গতকালের ঘটনার পর বিশেষ করে বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলার সম্ভাবনা রয়েছে সিবিআই-এর। তবে শেষ পর্যন্ত অনুব্রত-সিবিআই মামলা কোন দিকে গড়ায়, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।