বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে গত দুবছর থেকে তোলপাড় রাজ্য। ২০২২ সালে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বহু তৃণমূল নেতা সহ শিক্ষাদপ্তরের একাধিক আধিকারিক। আদালতে চলছে একের পর এক মামলা। মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই। একই সঙ্গে চার্জশিটের কপিও যুক্ত করা হয়েছে।
চাকরি দুর্নীতির জেরে গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডলরা। চাকরি দুর্নীতির ক্ষেত্রে কিভাবে তারা মিডিলম্যান হিসেবে কাজ করতেন তা আগেই আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এবার তাদের আরও বড় কেলেঙ্কারি ফাঁস করল সিবিআই (CBI)। এতদিনের লাগাতার তদন্তের পর নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই-এর হাতে ঠিক কী কী তথ্য উঠে এসেছে, সেইসবের উল্লেখ রিপোর্ট জমা পড়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। রিপোর্টে রয়েছে, ধৃত কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডলের নাম। তাদের মধ্যে কীভাবে অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছে সেই তথ্যও দিয়েছে সিবিআই।
এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই ২০১৪ সালে প্রাথমিক নিয়োগে নিয়ে বিস্তারে তদন্ত জমা করেছে সিবিআই। সিবিআই এর দাবি, অবৈধ ভাবে বিপুল টাকা তোলা হয়েছিল। তদন্তে উঠে এসেছে, তাপস মণ্ডলের ৮ জনের মতো সাব এজেন্ট ছিলেন। এই এজেন্টদের মাধ্যমে চলত টাকা তোলার পক্রিয়া।
এজেন্টদের কাজে লাগিয়ে মূলত টিচার্স ট্রেনিং কলেজের মালিকদের কাছ থেকে টাকা তোলা হত। আবার টেট প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কুন্তল ও তাপসের কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা পৌঁছেছে বলে এদিন জানিয়েছে সিবিআই। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১৪১ জনের কাছ থেকে ৪ কোটি ১২ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তাপস। যার মধ্যে থেকে কুন্তল ঘোষকে দিয়েছিলেন ৫ কোটি ২৩ লক্ষ।
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি কাণ্ডে নয়া মোড়! এবার বসিরহাটের SP-র অফিসে হাজির CBI! কীসের খোঁজে?
রিপোর্টে দাবি, প্রায় ওই একই সময়ে কুন্তল ঘোষ তার তিনজন এজেন্টের মাধ্যমে ৭১ জন চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। টাকার বিনিময়ে প্রার্থীর তালিকায় নাম উঠে যেত অযোগ্যদের। তাদের বিশ্বাস অর্জনে তৈরি হয়েছিল www.wbtetresults.com নামের ভুয়ো ওয়েবসাইট। হুবহু আসল ওয়েবসাইটের মতোই দেখতে এই ওয়েবসাইটে অযোগ্যদের নাম তোলা হত বলে অভিযোগ।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি তরফে জানানো হয়েছে ২০১৭ সালে ৭৫২ জনের চাকরি প্রার্থীর (Recruitment scam) একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। যারা কেউই টেট পাশ করেননি। এরা প্রত্যেকেই অযোগ্য প্রার্থী বলে জানিয়েছে CBI রিপোর্ট। এদের মধ্যে ৩১০ জনকে চাকরি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
২০১৭ সালে ৭৫২ জন এমন চাকরি প্রার্থীর একটি তালিকা প্রকাশিত হয় যাঁরা কেউই টেট পাশ করেননি বলে অভিযোগ। আর এই ৭৫২ জনের মধ্যে ৩১০ জনকে চাকরিও দেয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। টাকার বিনিময়ে এভাবে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হত বলে অভিযোগ সামনে এসেছে।