বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলায় অকালে কালবৈশাখী (পড়ুন ইডি)। গত শুক্রবার থেকে তে ঝড় শুরু হয়েছে তা এখনো থামার নাম নেই, বরং তাণ্ডব দিনের পর দিন আরো বাড়ছে। আর এই অকালবৈশাখীতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)।
এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে গত শুক্রবার টানা ২৭ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চলেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২১ কোটি নগদ টাকা সহ সোনার গয়না, সম্পত্তির কাগজ, বিদেশি মুদ্রা। ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ অর্পিতা। দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া তথ্য থেকে বুধবার ইডি হানা দেয় অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে।
সেখান থেকেও উদ্ধার হয়েছে যখের ধন। পরিমাণটা এবারে আরো বেশি। প্রায় ২৮ কোটি নগদ টাকা, কয়েক কেজি সোনার গয়না সহ কয়েকটি ‘সেক্স টয়’ও নাকি উদ্ধার হয়েছে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে। সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গিয়েছে মুখরোচক, কুরুচিকর মিম, ট্রোলে। ‘অপা’ এখন চর্চার হট টপিক।
একদিকে যেমন মিমের ঝড় উঠছে নেটপাড়ায়, তেমনি ছিছিক্কার করছেন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন শিল্পীরা। কী বিচিত্র এ রাজ্য! একদিকে চাকরির দাবিতে দিনের পর দিন অনশন, ধর্নায় ক্লান্ত মানুষকে পুলিস দিয়ে সরানো হচ্ছে। অন্যদিকে অর্পিতাদের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা! এ কুবেরের ধনের শেষ কোথায়? এল কোথা থেকে? শিল্পীদের একাংশের মতে, মিমের বদলে এই প্রশ্নগুলো করা উচিত।
আগেই মুখ খুলেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন ‘পশ্চিমবঙ্গ জোকারদের রাজ্য। অমি চূড়ান্ত হতাশ। আমি এই রাজ্যের বাসিন্দা, এ নিয়ে আমার এতটুকুও গর্ব নেই। তোমার প্রতিটা বিষয় নিয়েই এখন ঘৃণা হোক। এখানে না জন্মালেই ভাল হত।’
একই সুর অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখাতেও। ফেসবুকে তাঁর বক্তব্য, ‘বুকে পাথর চাপা দিয়ে বলছি আজ সত্যি বাঙালি হিসেবে লজ্জা লাগছে’। অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘এত আমোদের মাঝে যেন ভুলে না যাই যোগ্যতায় যাদের শিক্ষক হওয়ার কথাছিল তারা ধর্না মঞ্চে অবস্থানকরী পরিচয়ে ৫০০ দিন কাটিয়ে দিলেন।’
ধিক্কার জানিয়েছেন ঋদ্ধি সেন, ‘একদিকে চলতে থাকুক বঙ্গভূষণ , বঙ্গবিভূষণ আর মহানায়ক সম্মান, অন্যদিকে আরও ২০ কোটি উদ্ধার আরেকটা ফ্ল্যাটে, আবিস্কার হবে আরও, বাড়বে আরও কিছু শূন্য। শুধু এর মাঝখানে রাস্তায় দিন রাত এক করে ন্যায্য দাবি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য আরও দুটো শুন্যে যোগ হলো ৫’এর সাথে, তাদের , যারা সৎ ভাবে স্বপ্ন দেখেছিলো। ছিঃ। মিম আর সার্কাস্টিক ইমোজির ভিড়ে আমরা যেন হারিয়ে না যাই, এই ঘটনা কোনও হাসির বিষয় না।’