বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আদালতের নির্দেশে বর্তমানে সন্দেশখালি কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই (Central Bureau of Investigation)। রোজ উঠে আসছে নিত্য নতুন তথ্য। সর্বপ্রথম রেশন দুর্নীতির সূত্রে উঠে এসেছিল শেখ শাহজাহানের নাম। এরপর তাঁর একের পর এক কীর্তির কথা জেনেছে রাজ্যবাসী। বলপূর্বক জমি দখল থেকে শুরু করে ভেড়ি দখল, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ভুরি ভুরি। তবে এবার কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে দাবি, বেআইনি অস্ত্র এবং গুলির কারবারও (Illegal Weapon Business) ছিল সন্দেশখালির ‘বাঘে’র।
রাজ্যজুড়ে লোকসভা নির্বাচন চলাকালীনই সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali) হানা দিয়েছিল সিবিআই (CBI)। এক শাহজাহান ঘনিষ্ঠের আত্মীয়ের বাড়িতে হানা দিয়ে উদ্ধার হয়েছিল বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার। সন্দেশখালির সরবেড়িয়া মল্লিকপুর পঞ্চায়েত এলাকা নিবাসী আবু তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে মিলেছিল বিদেশি পিস্তল, রিভলভার থেকে শুরু করে কার্তুজ। ইতিমধ্যেই সেগুলি সামনে রেখে তদন্তে নেমে পড়েছে সিবিআই।
তবে এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ভুয়ো কাগজ দিয়ে বাইরের রাজ্য থেকে অন্তত ৫০০টি বন্দুকের লাইসেন্স বানিয়েছিলেন শাহজাহান (Sheikh Shahjahan) এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। ইতিমধ্যেই প্রায় ৬০টির হদিশ মিলেছে বলে খবর।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূল কর্মীকে ঠাটিয়ে চড়, ৪-৫টি বাইক ভাঙল পুলিশ! ভোটের দিন অশান্ত বহরমপুর
গোয়েন্দাদের দাবি, শাহজাহানের ঘনিষ্ঠদের কাছে এখনও কয়েক হাজার কার্তুজ এবং নানান ধরণের কয়েকশো দেশি-বিদেশি পিস্তল মজুত আছে বলে খবর মিলেছে। এক তদন্তকারীর কথায়, এখনও সন্দেশখালির ‘বাঘে’র অস্ত্রভাণ্ডারের খোঁজ চলছে। অন্যান্য কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দাদের সঙ্গে এই নিয়ে মিটিং করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে আদালতে রিপোর্ট জমা করা হবে এবং এরপর কী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা ঠিক করা হবে।
এই বিষয়ে সিবিআইয়ের একজন কর্তা বলেন, ‘শুধুমাত্র অনুমান করে আমরা এমনটা বলছি না। আবু তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে শাহজাহান এবং তাঁর ভাই শেখ আলমগীরের নামে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স উদ্ধার হয়েছে। এরপরেই আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর এই নিয়ে খোঁজ শুরু করা হয়’। সূত্রের দাবি, বাইরের রাজ্য থেকে ভুয়ো নথি দিয়ে নেওয়া লাইসেন্সের ওপর ভিত্তি করে নানান সরকারি দোকান থেকে কার্তুজ কিনতেন শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনী। এরপর দুষ্কৃতীমহলে তা মোটা টাকায় বিক্রি করা হতো। উল্লেখ্য, আবু তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে প্রচুর কার্তুজও পাওয়া গিয়েছিল। পরে জানা যায়, সেগুলো সরকারি দোকান থেকে কেনা হয়েছিল। কলকাতার বেশ কয়েকটি দোকানের রশিদও মিলেছিল তাঁর বাড়িতে।
সিবিআইয়ের দাবি, ইতিমধ্যেই সন্দেশখালি এবং তার পার্শ্ববর্তী নানান এলাকায় বাইরের রাজ্যের প্রায় ৬০টির বেশি লাইসেন্সের খোঁজ মিলেছে। ভুয়ো কাগজ দিয়ে বাইরের রাজ্য থেকে সেই সকল লাইসেন্স তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। সেগুলো দেখিয়ে প্রথমে আগ্নেয়াস্ত্র এবং এরপর কার্তুজ কেনা হতো বলে দাবি। তদন্তকারীদের মতে, এই করে সরকারিভাবে হাজার হাজার কার্তুজ কেনা হতো এবং তারপর তা মোটা টাকায় মার্কেটে বিক্রি করা হতো।