বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ‘হাতিয়ার’ করে বিরোধীদের নিশানা করার অভিযোগ বহুবার বিজেপির বিরুদ্ধে উঠেছে। লোকসভা ভোটের আবহে রাজ্যজুড়ে একাধিকবার ‘অ্যাকশনে’ নামতে দেখা গিয়েছে ইডি, সিবিআইকে। এবার যেমন ফের একবার সিবিআই (Central Bureau of Investigation) হানা দিল রাজ্যের এক জেলায়। কেন্দ্রীয় এজেন্সির স্ক্যানারে রয়েছেন তৃণমূলের দুই নেতা।
বৃহস্পতিবার কাঁথিতে (Kanthi) পদযাত্রা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরের দিনই শুভেন্দু-গড়ে হানা দিল সিবিআই (CBI)। ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় কাঁথির ৩ নং ব্লকের ভাজাচাউলির দু’জন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার বাড়িতে হানা দেন গোয়েন্দারা। সেই দুই নেতার নাম নন্দদুলাল মাইতি এবং দেবব্রত পণ্ডা।
জানা যাচ্ছে, একুশের বিধানসভা ভোটে এগরা থানার বাথুয়াড়ি এলাকায় জন্মেঞ্জয় দলুই নামের একজন ব্যক্তিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল নন্দদুলাল মাইতিদের বিরুদ্ধে। তবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তালিকায় নন্দদুলালের নাম নেই। তাঁর ছেলে বুদ্ধদেবের নাম রয়েছে। তবে এদিন বুদ্ধদেবকে না পেয়ে নন্দদুলালকে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করেন গোয়েন্দারা। তবে তাঁদের সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
আরও পড়ুনঃ ‘১ লাখের বেশি ভোটে হারবেন’! কল্যাণের বিরুদ্ধে পোস্টার দিল খোদ তৃণমূল? তোলপাড় রাজ্য!
অন্যদিকে তৃণমূলের আর এক নেতা দেবব্রতকেও পায়নি সিবিআই। তাঁকে না পেয়ে মেয়েকে জেরা করেন বলে খবর। অন্যদিকে সিবিআই হানা দিয়ে একথা জানতে পারার পর কেন্দ্রীয় এজেন্সির তালিকায় পয়লা নম্বরে নাম থাকা কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশচন্দ্র বেজ গা ঢাকা দিয়ে দেন।
উল্লেখ্য, ঘটনাটি ঘটেছিল একুশ সালের ৩০ মার্চ। বিজেপি নেতা জন্মেঞ্জয় সেদিন বাড়ি ফিরছিলেন। উত্তর কাঁথির বাথুয়াড়ি এলাকার নিবাসী ছিলেন তিনি। তবে সেই সময় মশাগা সেতুর কাছে তৃণমূল নেতারা জন্মেঞ্জয়কে মারধরে করে বাইকে করে তুলে নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। এরপর ভাউচাউলি এলাকার কাদুয়া থেকে বিজেপি নেতার রক্ত মাখা দেহ উদ্ধার হয়।
প্রয়াত জন্মেঞ্জয় একদা সিপিএমের অংশ ছিলেন। সেই জন্য সিপিএমের তৎকালীন মারিশদার জোনাল সম্পাদন কালীপদ শিট তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। কালীপদের সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ৬ জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রায় ৩ মাস পর জামিনে ছাড়া পান তাঁরা।
এরপরেই প্রয়াত জন্মেঞ্জয়ের বাড়ির লোকেরা সিবিআই তদন্তের দাবি তুলতে থাকেন। এরপর আদালত কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে তদন্তভার তুলে দেয়। একুশ সালের ২১ ডিসেম্বর মাসে সিবিআই সেই দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপর থেকে তৃণমূলের নেতাদের বহুবার নোটিশ পাঠানো হয়। অনেকে সেই ডাকে সাড়া দিলেও বিকাশ বেজ হাজিরা দেননি। বারবার ডাক পাঠালেও সাড়া না দেওয়ায় এবার খোদ সিবিআই আধিকারিকরাই পৌঁছে গেলেন সেখানে।