বাংলাহান্ট ডেস্ক: আরাবল্লি পর্বতমালাকে (Aravalli Range) ঘিরে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রায়টি খুঁটিয়ে পড়লে স্পষ্ট বোঝা যায় যে দেশের প্রাচীনতম এই পর্বতমালার সংরক্ষণ নিয়েই আদালত জোর দিয়েছে। কোথাও আরাবল্লির ক্ষয়, ধ্বংস বা খননের পক্ষে কোনও সওয়াল করা হয়নি বলেই দাবি করেন মন্ত্রী।
আরাবল্লি (Aravalli Range) নিয়ে আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি কেন্দ্র
ভূপেন্দ্র যাদবের বক্তব্য অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে দিল্লি, রাজস্থান ও গুজরাট জুড়ে বিস্তৃত আরাবল্লি পর্বতমালাকে বৈজ্ঞানিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্র সরকার শুরু থেকেই ‘সবুজ আরাবল্লি’ রক্ষার পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর দাবি, এই প্রথম সরকারের পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত উদ্যোগগুলিকে এভাবে বিচারবিভাগের স্বীকৃতি মিলল, যা কেন্দ্রের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের অফিসে লুটপাট চালিয়ে সেই টাকা দিয়ে কেনা হয় টিভি-ফ্রিজ! জানাল ধৃতরা
মন্ত্রী আরও জানান, সুপ্রিম কোর্ট যে টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছে, তার ভূমিকা সীমিত। ওই কমিটির কাজ মূলত খনন সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা, নীতিগত ভাবে খননের অনুমোদন দেওয়া নয়। আরাবল্লিকে ঘিরে বিতর্কিত ‘১০০ মিটার’ সংজ্ঞা প্রসঙ্গে ভূপেন্দ্র যাদব ব্যাখ্যা করেন, এটি কোনও এলাকা বাদ দেওয়ার কৌশল নয়। পাহাড়ের চূড়া থেকে পাদদেশ পর্যন্ত উচ্চতার মাপ হিসেবেই এই মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। একই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, জাতীয় রাজধানী অঞ্চল বা এনসিআর এলাকায় কোনও ধরনের খননের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশের উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী জানান, প্যারাগ্রাফ ৩৮-এ আদালত স্পষ্ট করেছে যে, অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নতুন কোনও খনন লিজ দেওয়া যাবে না। তিনি মনে করিয়ে দেন, আরাবল্লি অঞ্চলে বর্তমানে ২০টি অভয়ারণ্য এবং চারটি টাইগার রিজার্ভ রয়েছে। এই তথ্যই প্রমাণ করে যে আরাবল্লির পরিবেশগত গুরুত্ব কতটা গভীর এবং কেন এই পর্বতমালার সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।

আরও পড়ুন:সম্প্রীতির কবির সমাধির পাশেই ভারতবিদ্বেষী হাদির কবর! ক্ষোভ প্রকাশ নজরুলের পরিবারের
তবে অন্য দিকে, ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়া তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, আরাবল্লিতে প্রায় ১০ হাজার খনন কার্যকলাপ এই পর্বতমালাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সেন্ট্রাল এমপাওয়ার্ড কমিটি এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চাইলেও কেন্দ্রের যুক্তি, রাজস্থানে রিচার্ড বারফি গাইডলাইন অনুযায়ী ১০০ মিটারের বেশি উচ্চতার গঠনগুলিকেই আরাবল্লির অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সব মিলিয়ে, আরাবল্লি সংরক্ষণ বনাম খনন বিতর্কে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ঘিরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যাখ্যার লড়াই এখনও চলছেই।












