বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অবশেষে বাড়ি ফিরলেন বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি (Chandana Bauri)। আর বাড়ি ফিরেই ছোট্ট বাবুটাকে কোলে নিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করে দিলেন তিনি। ওনার সেই পোস্ট মুহূর্তের মধ্যে ভাইরালও হয়ে যায়। ওনার সেই ছবি ভাইরাল হওয়ার প্রধান কারণ হল, বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিতে কলকাতায় গিয়ে ছোট ছেলের জন্য মন কাঁদছিল চন্দনার। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘পাঁচ দিন হল বাবুকে দেখিনি। ওঁর শরীরটা খারাপ। অধিবেশন শেষ হলেই তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যাব।”
বিধানসভার অলিন্দে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলেছিলেন চন্দনা বাউরি। বাঁকুড়ার শালতোড়ার এক দরিদ্র রামমিস্ত্রীর স্ত্রী চন্দনা এখন বাংলার সবথেকে জনপ্রিয় বিধায়ক। প্রথমের দিকে কলকাতায় গিয়ে এতকিছু দেখে ঘাবড়ে গেলেও, ধীরে ধীরে মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। এলাকার উন্নয়নের জন্য যেমন তিনি বিধানসভায় প্রতিটি জিনিষ বোঝার চেষ্টা করেছেন, তেমনই নিজের সন্তানের জন্যও চিন্তা করেছেন। তবে এবার তিনি বাড়ি ফিরেছেন। আর বাড়ি ফিরেই তাঁর ছোট বাবুকে কোলে নিয়ে ছবি তুলে নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন।
ওনাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় যে, বিধানসভায় ওনার কেমন লাগছে আর অভিজ্ঞতা কেমন? তখন তিনি উত্তর দেন, খুব ভালো লাগছে। চন্দনা বলেন, শ্রীরুপা দি, শুভেন্দু দা আমাকে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আমি ধীরে ধীরে সব শিখছি। চোখে এলাকার উন্নয়ন এবং গরিব মানুষের সমস্যার সমাধানের স্বপ্ন নিয়ে মেজদাদার গাড়ি ভাড়া করে সুদূর বাঁকুড়া থেকে বিধানসভার অধিবেশনে অংশ নেওয়ার জন্য কলকাতায় পাড়ি দিয়েছিলন চন্দনা। গাড়ি ভাড়া করা ছাড়া উপায় নেই দিনমজুর চন্দনার। তবে এই বিষয়ে তাঁর মেজদাদা তাঁকে অনেক সহযোগিতাও করছে।
বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার পর থেকেই বারবার শিরোনামে উঠে এসেছেন বিজেপির সবথেকে দরিদ্রতম প্রার্থী চন্দনা বাউরি। নিজের নির্বাচনী প্রচারে সকলের নজরও কেড়েছিলেন তিনি। এমনকি স্বয়ং মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী ওনার হয়ে রোড শো করতে বাঁকুড়া গিয়েছিলেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির কাজ সেরে পাড়ার প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রচার চালানো চন্দনা বাউরির প্রতি আস্থা দেখিয়েছিল শালতোড়ার মানুষ। আর তাঁদের আশীর্বাদ নিয়েই চন্দনা আজ বিধায়ক।
কদিন আগে চন্দনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে চন্দনা বলতে শোনা গিয়েছিল যে, ‘পঞ্চায়েতে যারা সমস্যার কথা নিয়ে আসছে, তাঁদেরই বলা হচ্ছে চন্দনা বাউরির কাছে চলে যান। চন্দনা বাউরিই যদি সবকিছু করে, তাহলে পঞ্চায়েতগুলিকে চন্দনা বাউরির হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক, আমি পঞ্চায়েতটাও দেখব। শালতোড়া বিধানসভাও দেখব। পঞ্চায়েত প্রধানরা যদি মনে করেন চন্দনা বাউরির কাছে গেলে সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে, প্রত্যেকটা প্রধানকে আমি বলতে চাই, চন্দনা বাউরিকে পঞ্চায়েত গুলো ছেড়ে দেওয়া হোক, চন্দনা বাউরি একাই দেখে নেবে।”
প্রথমবার রাজনীতির আঙিনায় পা রাখলেও চন্দনা এটা বুঝে গিয়েছেন যে, ওনাকে এগিয়ে যেতে হলে ভালো কাজ করতে হবে। আর চন্দনা এটুকুও জানেন যে, তাঁকে শুধু শালতোড়ার মানুষই দেখছেন না, গোটা বাংলার অনেক মানুষ তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে। অনেকেরই এখন রোল মডেল চন্দনা। তাই সে মানুষের আশা পূরণ করতে প্রতিবদ্ধ।