বাংলা হান্ট ডেস্ক: সোমবার চিন (China) চ্যাং ঝেং ৫ বি রকেটে (Chang Zheng 5B Rocket) মেংটিয়ান মডিউলের (The Mengtian Module) সফল উৎক্ষেপণ করেছে। দক্ষিণ চিনের হাইনানের ওয়েনচাং স্পেস লঞ্চ সাইট থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রায় আট মিনিটের উড়ানের পরে, মডিউলটি রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তার নির্ধারিত কক্ষপথে প্রবেশ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, মেংটিয়ান ল্যাব মডিউলটি চিনের মহাকাশ স্টেশনের তৃতীয় এবং সর্বশেষ অংশ। এর পরে, চিন তার প্রথম T-আকৃতির এবং স্থায়ী স্পেস স্টেশন নির্মাণের শেষ প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে। উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের জুলাই মাসে চিন Wentian-এর লঞ্চ করেছে। যেখানে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালানো হবে।
Chang Zheng 5B রকেটটিকে লং মার্চ-5B ক্যারিয়ার রকেটও বলা হয়। এটি একটি শক্তিশালী রকেট যা এখনও পর্যন্ত চিনা স্পেস স্টেশনের তিনটি মডিউলই উৎক্ষেপণ করেছে। পাশাপাশি, সেগুলির প্রতিটির ওজনই ২২ টনের বেশি ছিল। উল্লেখ্য যে, এই রকেটে চারটি ৩.৩৫ মিটার-ব্যাসের তরল প্রোপেলান্ট বুস্টার রয়েছে এবং এটি টেক-অফের সময় ১,০৭৮ টন ওজন বহন করতে পারে। এছাড়াও, এটি পৃথিবীর কক্ষপথে ২৫ টন ওজনের একটি পেলোড পাঠাতেও সক্ষম।
সাংহাই একাডেমি অফ স্পেসক্রাফ্ট টেকনোলজি (SAST) অনুসারে, এই ১৭.৮৮ মিটার দীর্ঘ ও ৪.২ মিটার ব্যাসের মেগা স্পেস ল্যাবটি লঞ্চের সময়ে এটির ওজন ছিল ২৩.৩ টন। যা চিনের এখনও পর্যন্ত লঞ্চ করা সবচেয়ে ভারি পেলোড হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এদিকে, মেংটিয়ান মডিউলটি মহাকাশচারীদের জন্য একটি ওয়ার্ক স্টেশন হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটিতে মোট ১৩ টি পেলোড ক্যাবিনেট রয়েছে। যেখানে মাইক্রোগ্র্যাভিটি স্টাডির পাশাপাশি ফ্লুইড ফিজিক্সের মতো বিশেষ পরীক্ষাও করা যেতে পারে।
এর পাশাপাশি, মেংটিয়ান একটি হাইড্রোজেন ঘড়ি সহ বিশ্বের প্রথম কোল্ড অ্যাটোমিক ক্লকের সেট বহন করছে। যার মধ্যে একটি রুবিডিয়াম ঘড়ি এবং একটি অপটিক্যাল ঘড়ি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইউটিলাইজেশন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার অফ টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টারের নির্দেশক ঝাং ওয়েই জানিয়েছেন, এই কোল্ড অ্যাটোমিক ক্লক মহাকাশে সবচেয়ে সঠিক সময় এবং ফ্রিকোয়েন্সি সিস্টেম তৈরি করবে।
উল্লেখ্য যে, মেংটিয়ানে বিশাল নমনীয় সোলার প্যানেল লাগানো হয়েছে। যা প্রায় ১৩৮ বর্গ মিটার পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। এমতাবস্থায়, চিনের টি-আকৃতির স্পেস স্টেশন সম্পূর্ণ হলে, Wentian এবং মেংটিয়ান মডিউলে বসানো সোলার প্যানেলগুলি একসাথে দিনে প্রায় হাজার কিলোওয়াট ঘন্টা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পার। এর মানে হল, স্পেস স্টেশনে বিদ্যুতের কোনো সমস্যা হবে না।
🚀Blastoff!!! Long March 5B with the 23t #Mengtian Laboratory Module lifted off from Wenchang! T0 at 07:37:23 UTC https://t.co/LzS1oPUPf1 pic.twitter.com/HRozNkfm19
— China 'N Asia Spaceflight 🚀𝕏 🛰️ (@CNSpaceflight) October 31, 2022
একবার এই স্পেস স্টেশন তৈরি হয়ে গেলে, তিয়াংগং স্টেশন এখানে ২৩ টি পরীক্ষা চালাবে। এদিকে, চায়না ম্যানড স্পেস এজেন্সি (CMSA) ইতিমধ্যেই হাজারটিরও বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে। যা আগামী বছরগুলিতে স্পেস স্টেশনে করা হবে। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে এমন দু’টি মহাকাশ স্টেশনের মধ্যে অন্যতম একটি হল তিয়াংগং। অন্যদিকে অপরটি হল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। উল্লেখ্য যে, চিন ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চাইনিজ সার্ভে স্পেস টেলিস্কোপ (CSST) চালু করারও পরিকল্পনা করছে। এই টেলিস্কোপের ভর হবে ১৫,৫০০ কেজি এবং এটিতে দুই মিটারের একটি প্রাইমারি মিরর থাকবে। পাশাপাশি, এটি হাবল টেলিস্কোপের চেয়ে ৩০০-৩৫০ গুণ ভালো পর্যবেক্ষণ করবে বলেও জানা গিয়েছে।