দিতে সক্ষম ১০০ টন দুধ! চিন তৈরি করে ফেলল “সুপার কাউ”-এর ৩ টি ক্লোন! জন্মাবে আরও ১,০০০ গরু

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার ফের একবার নজিরবিহীন কান্ড ঘটিয়ে ফেললেন চিনা বিজ্ঞানীরা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, এবার বিজ্ঞানীরা “সুপার কাউ” (Super Cow)-য়ের সফল ক্লোনিং করেছেন। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই ৩ টি বাছুরও জন্ম নিয়েছে। মূলত, এই সুপার কাউগুলি বিপুল পরিমানে দুধ দিতে পারে। এই প্রসঙ্গে চিনের (China) গণমাধ্যমগুলি বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যকে ওই দেশের দুগ্ধ শিল্পের জন্য বৈপ্লবিক হিসেবে বর্ণনা করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপার কাউয়ের সফল ক্লোনিং আমদানি করা গরুর জাতের ওপর চিনের নির্ভরতাকে কমিয়ে দেবে। নর্থওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা ২৩ জানুয়ারি অর্থাৎ লুনার নিউ ইয়ারের আগের সপ্তাহে সুপার কাউয়ের তিনটি বাছুর ক্লোন করেছেন।

জানা গিয়েছে, ওই তিনটি বাছুরই হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে ক্লোন করা হয়েছিল। এই জাতের গরু নেদারল্যান্ডসে পাওয়া যায়। পাশাপাশি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু বিপুল পরিমানে দুধ দিতে সক্ষম হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই জাতের একটি গরু বছরে ১৮ টন এবং তার জীবদ্দশায় ১০০ টন পর্যন্ত দুধ উৎপাদন করতে সক্ষম।

এই প্রসঙ্গে নিংজিয়ার বুলিন শহরের একজন আধিকারিক টেকনোলজি ডেইলিকে বলেছেন যে, ক্লোন করা বাছুরগুলির মধ্যে প্রথমটি গত ৩০ ডিসেম্বর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্মেছিল। যেটির ওজন ছিল ৫৬.৭ কেজি (১২০ পাউন্ড)। টেকনোলজি ডেইলির মতে, বিজ্ঞানীরা অত্যধিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী গরুর কানের কোষ থেকে ১২০ টি ক্লোন করা ভ্রূণ তৈরি করেছেন এবং সেগুলিকে সারোগেট গাভীর গর্ভে স্থাপন করেছেন।

পাশাপাশি, চিনের আরেক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস এই প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী জিন ইয়াপিংকে উদ্ধৃত করে “সুপার কাউ”-এর সফল ক্লোনিংকে একটি বড় কাজ হিসেবে বিবেচিত করেছে। এছাড়াও, দুগ্ধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে চিনকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার পথে এটি একটি বড় পদক্ষেপ বলেও মনে করা হচ্ছে। মূলত, এই প্রকল্পের সাফল্য চিনকে খুব ভালো জাতের গরু সংরক্ষণ করার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান করে তুলবে।

এছাড়াও, জিন ইয়াপিং গ্লোবাল টাইমসকে জানিয়েছেন যে, চিনের ১০,০০০ গরুর মধ্যে মাত্র ৫ টি তাদের জীবদ্দশায় ১০০ টন দুধ উৎপাদন করতে পারে। যা তাদের প্রজননের ক্ষেত্রে একটি মূল্যবান সম্পদ করে তোলে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে অত্যধিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী গরুকে তাদের জীবনের শেষ অবধি শনাক্ত করা যায় না। যার কারণে তাদের লালন-পালন করা কঠিন হয়ে পড়ে। গ্লোবাল টাইমসের মতে, চিনের ৭০ শতাংশ দুধেল গরু বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

230202084836 cows china file

এদিকে, “সুপার কাউ” প্রজেক্টের প্রধান বিজ্ঞানী জিন ইয়াপিং গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, “বিদেশি গরুর ওপর চিনের নির্ভরতার বিষয়টি মোকাবিলা করার জন্য একটি শক্ত ভিত্তি হিসেবে আমরা এক হাজারের বেশি সুপার কাউ-এর প্রজননের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে।” এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখিযে, চিন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জীবের ক্লোনিংয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। গত বছর, চিনের একটি ক্লোনিং সংস্থা বিশ্বের প্রথম ক্লোন করা আর্কটিক নেকড়ে তৈরি করেছিল।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর