বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে একদিকে যখন সারা বিশ্বের চোখ রয়েছে ইরান-ইজরায়েল (Iran-Israel Conflict) সংঘর্ষের দিকে ঠিক সেই আবহেই চিনের (China) অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সমস্ত অনুমানকে ভুল প্রমাণিত করে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি দেখেছে। যেখানে সারা বিশ্ব থেকে আসা অনুমান ছিল ৫ শতাংশের নিচে। উল্লেখ্য যে, চিনের PMI পরিসংখ্যান গত কয়েকদিনে বেড়েছে। যার কারণে চিনের অর্থনীতি এখন ট্র্যাকে আসছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
চিনের অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে: এমতাবস্থায়, যে বৃদ্ধির পরিসংখ্যান সামনে এসেছে তা ফের একবার প্রমাণ করাবে যে চিন বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির অন্যতম ইঞ্জিন। পাশাপাশি, এই পরিসংখ্যানগুলি চিনকে বিদেশি বিনিয়োগ পেতে এবং যে বিদেশি কোম্পানিগুলি চিন থেকে সরে যেতে চাইছে তাদের বোঝাতে সাহায্য করবে। ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে যে, চিনের অর্থনীতি প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে বার্ষিক ৫.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি বিশ্লেষকদের অনুমানের চেয়ে প্রায় ৪.৮ শতাংশের চেয়ে বেশি। এর মানে চিনের অর্থনীতি সম্পর্কে যে ধরণের অনুমান আসছে চিন সেই সব জল্পনাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করেছে। পাশাপাশি, আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় বৃদ্ধির হার বেড়েছে ১.৬ শতাংশ। উল্লেখ্য যে, চিনের অর্থনীতি করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য ক্রমাগত সংগ্রাম করছে।
গুরুত্বপূর্ণ কারণ: চিনের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ সামনে এসেছে। একদিকে, বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে শিল্প উৎপাদন বার্ষিক ভিত্তিতে ৬.১ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, খুচরো বিক্রিতে বার্ষিক ৪.৭ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে উত্থান মানেই চাহিদার উন্নতি দেখা গেছে। যার কারণে অন্যান্য খাতেও কিছুটা বৃদ্ধি ঘটেছে। এই কারণে GDP-র পরিসংখ্যান প্রত্যাশার চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে। অন্যদিকে, পলিসি মেকার্সরা চিনের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য একাধিক আর্থিক ও মুদ্রানীতির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। চিন ২০২৪ সালের জন্য GDP বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।
আরও পড়ুন: ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষের এফেক্ট! ধনকুবেররা হারালেন ২৩,৩৯,৯৭,৮২,০০,০০০ টাকা, কার বেশি ক্ষতি?
এখনও অনেক উদ্বেগ আছে: রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সামগ্রিকভাবে চিত্র বেশ ইতিবাচক দেখালেও তারপরেও একাধিক উদ্বেগ রয়ে গেছে। মার্চের তথ্যগুলিতে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ের তুলনায় শিল্প উৎপাদন এবং খুচরো সেল গ্রোথে মন্দাকে নির্দেশ করেছে। যেটি গ্রাহকদের চাহিদা এবং ব্যবসায়িক আস্থার সম্ভাব্য দুর্বলতা নির্দেশ করে। উপরন্তু, প্রোপার্টি সেক্টর, যেটি চিনা অর্থনীতির অন্যতম একটি স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয় সেটি বর্তমানে গভীর সঙ্কটে রয়েছে।
আরও পড়ুন: দাম ১১ কোটি, আর IPL-এ খেলবেন না ম্যাক্সওয়েল! কারণ জেনে চমকে যাবেন
রয়টার্সের মতে, সর্বশেষ GDP পরিসংখ্যান সম্পর্কে বিশ্লেষকদের বিভিন্ন মূল্যায়ন সামনে এসেছে। কিছুজন চিনের জন্য নতুন আশার আলো দেখছেন। অন্যদিকে, কিছুজন সতর্ক করেছেন যে, প্রোপার্টি মার্কেটের ওপর অত্যধিক নির্ভরতা মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি সহ আরও অনেক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।