উভয়সঙ্কটে শরীফ! পাকিস্তানে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব চিনের, রাজি না হলেই অ্যাকশন নিতে প্রস্তুত বেজিং

বাংলা হান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) চিনা নাগরিকদের ওপর ক্রমাগত হামলায় ক্ষুব্ধ চিন (China)। শুধু তাই নয়, চিন পাকিস্তানকে কটূক্তি করে বলেছে, “পাকিস্তান যদি চিনা নাগরিক ও চিনা বিনিয়োগ রক্ষা করতে না পারে, সেক্ষেত্রে আমাদের তা করতে দিন।” চিনের এই বক্তব্যের উদ্দেশ্য হল পাকিস্তানে সেনা মোতায়েন করা। এদিকে, এটা পাকিস্তানের জন্য বড় বিব্রতকর বিষয় বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) রক্ষার জন্য পাকিস্তান প্রায় ১০ বছর আগে একটি স্পেশাল ফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিস ডিভিশন (SSD) তৈরি করেছিল। কিন্তু, সেটিও হামলা বন্ধ করতে পারেনি।

পাকিস্তানে সেনা মোতায়েন করতে চায় চিন: পাকিস্তানি মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, কয়েকদিন আগে ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ২৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বেশামে আত্মঘাতী হামলায় পাঁচজন চিনা ইঞ্জিনিয়ার এবং তাঁদের পাকিস্তানি ড্রাইভারের মৃত্যুর ঘটনায় চিনের ক্ষোভ বাড়ছে। পাশাপাশি, চিন তার নাগরিকদের হত্যার তদন্তের জন্য পাকিস্তানে একটি বিশেষ দল পাঠিয়েছে। এই দল তদন্তের সময়ে পাকিস্তানকে অনেক অপমান করে। চিনা তদন্ত দল দাবি করেছে, পাকিস্তানের নাগরিকদের নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল। আর এই কারণেই চিনা নাগরিকদের ওপর হামলার সুযোগ পায় সন্ত্রাসবাদীরা।

China's proposal to deploy troops in Pakistan.

পাকিস্তানকে কি বলেছে চিন: রিপোর্ট অনুযায়ী, চিনা তদন্ত দল বলেছে, “আপনারা যদি আমাদের বিনিয়োগ ও জনগণকে রক্ষা করতে না পারেন, তাহলে আমাদের তা করতে দিন।” এর অর্থ হল চিন চায় তার প্রকল্প এবং জনগণের সুরক্ষার জন্য তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হোক। তবে, এর জন্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। এর মধ্যে প্রথমটি পাকিস্তানে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে কাজ করা চিনা নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়ানো। দ্বিতীয়ত, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির মধ্যে আরও ভালো সমন্বয় বজায় রাখা। তৃতীয়ত, সন্ত্রাসবাদীদের ওপর কড়া নজর রাখা এবং চতুর্থত, চিনের সাথে মৈত্রী আরও শক্তিশালী করা।

আরও পড়ুন: মাত্র ৪ দিনেই হয়েছে ৪৫,০০০ কোটির কামাই! বিনিয়োগকারীদের মালামাল করল আম্বানির কোম্পানি

চিনা নাগরিকদের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলার কারণে সমস্যায় CPEC: উল্লেখ্য যে, বেশামের ঘটনাটি মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে চিনা স্বার্থের ওপর তৃতীয় মারাত্মক হামলা ছিল। গোয়াদর পোর্ট অথোরিটি কমপ্লেক্স এবং একটি নৌ বিমান ঘাঁটি গত সপ্তাহে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা “টার্গেট” হয়েছিল। যারা চিনা নাগরিকদের তাদের ভূখণ্ডের সম্পদের শোষণকারী হিসেবে দেখে।

আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতির দাপটে কাবু কাঙাল পাকিস্তান! পেট্রোলের দাম পৌঁছল ২৯০ টাকায়, চরম বিপাকে সাধারণ মানুষ

শাহবাজ শরীফের জন্য কঠিন পরিস্থিতি: এদিকে, চিনের প্রস্তাবে খারাপ ভাবে আটকে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। তিনি যদি চিনা সেনা মোতায়েনের অনুমোদন না দেন, তাহলে চিন ভড়কে যেতে পারে। এমনকি, চিন CPEC-র ফান্ডিং পুরোপুরি বন্ধ করতে পারে। এছাড়াও, তারা পাকিস্তানে কর্মরত তার নাগরিকদেরও প্রত্যাহার করতে পারে। একই সঙ্গে শাহবাজ যদি অনুমোদন দেন তাহলে তা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হবে। এমনকি, শাহবাজের পদক্ষেপে আমেরিকাও ক্ষুব্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, আমেরিকা কখনই চাইবে না যে চিনা সৈন্যরা পাকিস্তানের মাটিতে উপস্থিত থাকুক।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর