বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতে নেতা-নেত্রীদের সম্মানে মন্দির বা মূর্তি গড়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই মূর্তি যদি দেব/দেবীর রুপী হয়, তাহলে বিতর্কের ঝড় তো উঠবেই। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে বাগুইয়াটির নজরুল উন্নয়ন সমিতি মুখ্যমন্ত্রী মমতারুপী দশভুজার মূর্তি গড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি তা নিয়ে তীব্র আপত্তিও জাহির করেছিল। আর সেই বিতর্ক থামতে না থামতেই আরও একটি বিতর্ক মাথাচাড়া দিল।
এবার গণেশ চতুর্থীতে অভিনব মূর্তি গড়ে বিতর্কে জড়াল মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের জাগরণ সংঘ। তাঁরা সিদ্ধিদাতা গণেশকে দশুভুজার কোলে বসিয়ে অভিনব মূর্তি গড়েছে। আর সেই দশভুজা অবিকল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দেখতে। আসলে, উদ্যোক্তারা মুখ্যমন্ত্রীর আদলেই দেবী দুর্গার ওই মূর্তিটি বানিয়েছেন। অভিনবত্ব আনতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
দেবী মমতার কোলে থাকা গণেশের মূর্তি নিয়ে কারও আপত্তি না হলেও, প্রধান আপত্তি হচ্ছে দেবী দুর্গার বদলে মুখ্যমন্ত্রীর থাকা নিয়ে। দেবী মমতার মূর্তির দশটি হাতের একটিতেও রাখা হয়নি কোনও অস্ত্র। দুই হাত দিয়ে দেবী সিদ্ধিদাতা গণেশকে ধরে রেখেছেন। বাকি আটটি হাতে রয়েছে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প। এছাড়াও দেবীর পরনে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর মমতার প্রিয় রং নীল সাদা শাড়ি।
তবে যতই বিতর্ক ছড়াক না কেন, ক্লাব কর্তৃপক্ষ এই নিয়ে কোনও অপরাধ দেখছে না। তাঁদের মতে বিগত দশ বছর ধরে দুর্গতিনাশিনীর মতোই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষদের দুর্গতিনাশ করে চলেছেন। ওনার বিভিন্ন প্রকল্প রাজ্যের সাধারণ ও গরিব মানুষদের উপকার করে চলছে।
কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ যাই বলুক না কেন, বিজেপিতে এই মূর্তি নিয়ে তুমুল আপত্তি জাহির করেছে। বিজেপির জেলা সম্পাদক কিসান কেডিয়া বলেছেন, দেবী দুর্গার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তুলনা করা একদমই ঠিক নয়। হয়ত স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই এই কাজের সমর্থন করবেন না। সাধারণ মানুষও বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে যোগ্য জবাব দেবে মানুষ।
উল্লেখ্য, সিদ্ধিদাতা গণেশ সহ দেবী মমতার এই মূর্তি উদ্বোধন করেছেন মালদহ জেলার তৃণমূলের নেতারাই। মালদহ জেলার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা গোটা রাজ্যের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওনার জনমুখী প্রকল্পগুলির মাধ্যমে গোটা রাজ্যের মানুষ উপকার পেয়েছে। আর এই কারণেই ওনাকে সম্মান জানাতে আমরা ওনাকে দেবী দুর্গার রূপ দিয়েছি। এতে অন্যায় বা অপরাধের কিছুই নেই।