লকডাউনে ওষুধ কিনতে বেরোনো যুবকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় কালেক্টরকে বরখাস্ত করলেন ছত্রিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লকডাউনে একদিকে যেমন মানুষের মধ্যে দেখা গিয়েছে চরম অসতর্কতা। তেমনি বেশ কিছু ক্ষেত্রে সামনে এসেছে প্রশাসনিক পদের অপব্যবহারের ছবিও। কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময়ও সামনে এসেছিল এমন কিছু নির্মম ছবি। নিজেদের প্রশাসনিক পদের অপব্যবহার করছিলেন বেশকিছু পুলিশ কর্তা। কোথাও কোথাও এমন ছবিও দেখা গিয়েছে লকডাউনের সময় দোকান খোলা রাখতে দেখে তা ভাঙচুর করতে শুরু করেছে পুলিশকর্মীরা। এবার সামনে এলো এমনই এক নির্মম ভিডিও। ছত্রিশগড়ের এই ভাইরাল ভিডিওটিতে পদের অপব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে সুরজপুর এলাকার কালেক্টর রণবীর শর্মাকে।

শনিবার লকডাউন পরিস্থিতি চলা সত্বেও নেহাতই প্রয়োজনে পড়ে বাইরে বেরোনো এক যুবক। পরিবারের জন্য ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঠিক এই সময়ে লকডাউনের বিধি ঠিকঠাক পালিত হচ্ছে কিনা দেখতে অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে টহল দিতে বের হন কালেক্টর রণবীর শর্মা। এসময় ছেলেটিকে দেখতে পেয়েই মেজাজ হারান তিনি। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, কোন কথা না শুনেই ছেলেটিকে চড় মারতে শুরু করেন রণবীর। এমনকি ধাক্কা দিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে দেন। এমতাবস্থায় ছেলেটি বারবার ওষুধের প্রেসক্রিপশন দেখালেও কোন কথা শুনেননি রণবীর। এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে টনক নড়ে কালেক্টর রনবীর শর্মার। ছেলেটির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান তিনি।

কিন্তু এই ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসলো ছত্রিশগড় সরকার। রংবির শর্মাকে সুরাজপুরের কালেক্টরের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। তার জায়গায় এই মুহূর্তে পদে বসানো হয়েছে আইএএস গৌরব কুমার সিংকে। এদিন এ বিষয়ে পরপর দুটি টুইট করেন ভূপেশ। প্রথম টুইটে তিনি জানান, “সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রণবীর শর্মার এক যুবকের সঙ্গে করা দুর্ব্যবহারের ভিডিও আমার চোখে পড়েছে। এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং দুঃখজনক। এখনই যেন কালেক্টর রণবীর শর্মাকে তার পদ থেকে অপসারিত করা হয়।”

এর পরের টুইটে ওই যুবকের পরিবারের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। ভূপেশ বাঘেল লেখেন, “সরকারী জীবনে কোনও আধিকারিকের এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। আমি এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। আমি যুবক ও তার পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লকডাউনে একদিকে যেমন জনগণের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। বিধি উপেক্ষা করলে তাদের শাস্তিও নিশ্চয়ই প্রাপ্য। তবে তা কখনোই শারীরিকভাবে হেনস্থা হতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে ইতিমধ্যেই প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে জনতা।

 

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর