বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১০০, ২০০ নয়, প্রায় ৩১৫ কোটি টাকার দুর্নীতি! কয়লা খনির শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে (Provident Fund) যে টাকা জমা হয়েছিল, এবার তা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নরেন্দ্র মোদীর আমলে কয়লা খনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা হওয়া এই বিপুল অর্থ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
কয়লা খনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (Provident Fund) টাকা নিয়ে দুর্নীতি!
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, বুধবার সংসদের পিএসসি তথা পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) লোকসভার সাংসদ সৌগত রায় বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে খবর। একইসঙ্গে জানা যাচ্ছে, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ও এই নিয়ে মুখ খুলেছেন।
কয়লা খনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (Provident Fund) টাকা নিয়ে দুর্নীতির এই অভিযোগের বিষয়টি কর্পোরেট মন্ত্রকের ‘সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস’এ পাঠানোর দাবি করেন সুখেন্দুশেখর। সূত্র মারফৎ এমনটাই জানা গিয়েছে। এই দুর্নীতির নেপথ্যে কোনও উচ্চপদাধিকারী আছেন কিনা, দেওয়ান হাউসিং ফিনান্স কোঅপারেটিভ নামক যে বেসরকারি সংস্থায় কয়লা খনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা লগ্নি করা হয়, তার সঙ্গে কয়লা মন্ত্রকের আঁতাত রয়েছে কিনা সেটা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। বিশেষ করে যেহেতু উক্ত সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই এবং ইডির তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনঃ গাড়ির ধাক্কায় জখম প্রৌঢ়া! গ্রেফতার কাউন্সিলর-পুত্র! বিকেল গড়াতেই থানা থেকে জামিন অভিযুক্তের
রিপোর্ট বলছে, গতকালের বৈঠকে কয়লা খনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (Provident Fund) টাকা নিয়ে হওয়া এই দুর্নীতির বিহিত চেয়ে দলমত নির্বিশেষে সকল সদস্য সরব হয়েছিলেন। বিজেপি অনুরাগ ঠাকুর, সুধাংশু ত্রিবেদী, জগদম্বিকা পাল, কংগ্রেসের শক্তি সিং গোয়েল, অমর সিং, ডিএমকের টি আর বালু সহ একাধিক সদস্য এই দুর্নীতির নেপথ্যে কারা রয়েছেন সেটা ফাঁস হোক চেয়েছেন বলে খবর।
বিরোধীদের দাবি, ২০১৫ সালের মে মাসে এই দুর্নীতির সূত্রপাত। কোল মাইনস প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন পিএফের (PF) তহবিল থেকে ডিএইচএফএলের ঋণপত্রে ১৩৯০.২৫ কোটি টাকা লগ্নি করা হয়। এর মধ্যে ৮৬৪ কোটি টাকা আগেই ভাঙিয়ে নেওয়া যাবে, এই শর্ত ছিল। তবে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ উক্ত সংস্থার মূল্যায়ন একেবারে কমে যায়। সেই সময় তহবিলের লগ্নি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত পোর্টফোলিও ম্যানেজাররা কোল মাইনস প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশনেরকে একাধিকবার ওই ৮৬৪ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন বলে খবর।
পরবর্তীতে এই নিয়ে বৈঠক ডাকা হলেও টাকা তুলতে খানিকটা সময় বেরিয়ে যায় বলে খবর। এরপর যখন টাকা তোলা হয়, তখন দেখা যায় ৩১৫.২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপর মন্ত্রকের তরফ থেকে সিভিসিকে বিষয়টি পাঠানো হয়। সিভিসির তরফ থেকে মন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয় পিএফ কমিশনারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আদায় করার কাজ শুরু করতে। তা এখনও চলছে। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, ডিএইচএফএল নামক ওই সংস্থা উত্তরপ্রদেশের একটি সংস্থার ক্ষেত্রেও কয়েক হাজার কোটি টাকা নয়ছয় করেছে। অঙ্কটা প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা বলে খবর। এই নিয়ে মামলা চলছে। এবার কয়লা খনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (Provident Fund) টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। এই জল কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার।