বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) বহুদিন জেলবন্দি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। গতবছর সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে বাংলা পেরিয়ে কেষ্টর ঠিকানা হয়েছে দিল্লির তিহাড়। এদিকে বীরভূমের দুঁদে নেতা কেষ্ট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেই তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন অনেকে।
দাপুটে নেতা অনুব্রতর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন নানুরের বেলুটি গ্রামের বাসিন্দা বিজেপির ব্লক সাংগঠনিক পর্যবেক্ষক কল্যাণ সিংহ এবং লাভপুরের বাসিন্দা বিজেপির জেলা কার্যকরী সদস্য সুপ্রভাত বটব্যাল। তাদের অভিযোগ, অনুব্রতর নির্দেশে মিথ্যে ‘গাঁজা কেস’ (Drug Deals Case) দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে তাদের ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১৮ মাস জেল খাটার পর সিউড়ি আদালত থেকে বেকসুর খালাস পান তারা।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনে যোগ দেন কল্যাণ। এরপর ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তৃণমূলের বড়া-সাওতা অঞ্চল কমিটির যুব সভাপতির পদে ছিলেন তিনি। কল্যাণ সিংহের দাবি, দলে থাকাকালীন অনুব্রতকে দলের অন্দরের বিভিন্ন দুর্নীতি এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বারবার জানিয়েও কোনো সুরাহা না হওয়ায় ২০১৯ এ বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
অনুব্রতর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই তৃণমূল নেতৃত্বের বিষ নজরে পড়তে হয়। প্রায়ই গাঁজার কেস দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হত।’’ অন্যদিকে, সুপ্রভাতের একই অভিযোগ। তার কথায় তাকেও মিথ্যে অপহরণের কেস দিয়ে গ্রেফতার করানো হয়। যেই মামলা এখনও বিচারাধীন।
বর্তমানে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়াতে তারা বেজায় খুশি। কল্যাণ ও সুপ্রভাত দুজনেই বলেন, ‘‘বর্ধমানের শক্তিগড়ে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার একটি সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলাম। বের হতেই অনুব্রতর নির্দেশে ইলামবাজার থানার পুলিশ আমাদের মিথ্যা মাদক মামলায় গ্রেফতার করে। ১৮ মাস বিনা দোষে জেল খেটে বেকসুর খালাস পেয়েছি। জানতাম ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। এই দিনটার প্রতীক্ষায় ছিলাম দুজনেই। ”
তবে তাদের এই দাবি অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল ফাঁসিয়ে ছিলেন এমন অভিযোগ ঠিক নয়। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ ছিল তাই হয়তো পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পরে অভিযোগ যথার্থ মনে না হওয়ায় আদালত খালাস দিয়েছে।” পাশাপাশি তার বিশ্বাস অনুব্রত মণ্ডলও একদিন বেকসুর খালাস পাবেন।