বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও স্বজনপোষণের মারাত্মক অভিযোগ উঠল রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ শুধু মেয়ে অঙ্কিতাই নয় বাম আমলে মন্ত্রী থাকাকালীন আরও অন্তত ২৫ জন নিকট আত্মীয়কে অন্যায়ভাবে সরকারি চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
বাম আমলে ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন পরেশ অধিকারী। তাঁর দখলে ছিল খাদ্যমন্ত্রীর পদও। একটা সময় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকতা দিয়েই শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। শুধু তিনি নিজেই নয়, স্ত্রী মীরা অধিকারীও ছিলেন সরকারি কর্মচারী। সম্প্রতি রাজ্যের এসএসসি কেলেঙ্কারি মামলায় নাম জড়ায় বর্তমান শাসকদলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীরও। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে অন্যায় ভাবে দূর্নীতি করে মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে হাইস্কুলের শিক্ষিকা পদে নিয়োগ করিয়েছেন তিনি। ডাক পড়ে সিবিআই দপ্তরেও। মেয়ে অঙ্কিতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি খোয়ালেও এরপরই ধীরে ধীরে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে দেখা মেলে কেউটেদের।
বাম আমলে মন্ত্রী এবং বিধায়ক থাকাকালীন অধিকারী পরিবারের নিকট ২৫ আত্মীয়ের সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে এবার জেরবার পরেশ অধিকারী। মন্ত্রীমশাইয়ের তিন দাদা ও ভাই এর মধ্যে অখিল অধিকারীও করতেন সরকারি চাকরি। বউদি চাকরি করেন খাদ্য দপ্তরে এবং পরেশবাবুর ভাইঝিও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁর আর এক ভাইয়ের চার ছেলের মধ্যে ৩ জন খাদ্য দপ্তরে চাকুরিরত, অপর জন সরকারি কলেজের ক্লার্ক।
শুধু ভাইয়েদেরই নয়, বোনেদের পরিবারেরও আখের গুছিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রীমশাই। পরেশ অধিকারীর জীবিত দুই বোনই আইসিডিএস সুপারভাইজার। দুই ভাগ্নে ভাগ্নির মধ্যে একজন চাকরি করেন খাদ্য দপ্তরে অন্যজন স্কুলের ক্লার্ক। মন্ত্রীর মামাতো ভাই কৃষি দপ্তরের চাকুরে ছিলেন। পিসতুতো ভাই ছিলেন প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক। পিসতুতো ভাইয়ের দুই মেয়েই স্কুলের শিক্ষিকা। চিকিৎসক শ্যালকের স্ত্রী স্বাস্থ্য দপ্তরে এবং শ্যালকের শ্যালক শালিকারাও স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা। অপর এক শ্যালকের পুত্র এবং পুত্রবধূ উভয়েই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, অন্য আর এক শ্যালক বিডিও অফিসে কর্মরত।
একই পরিবারে সরকারি চাকরির এহেন ফিরিস্তি শুনে কার্যতই চোখ কপালে উঠতে বাধ্য রাজ্যবাসীর। যেখানে সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর পরিশ্রম করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পান না রাজ্যের যুবক যুবতীরা সেখানে একই পরিবারে এই বিপুল পরিমাণ সরকারি চাকরি সন্দেহের বিষয় বৈকি! আরও বেশি করে যেন চোখে লাগে পরিবারের মধ্যে খাদ্য দপ্তর এবং স্কুল কলেজে চাকুরির আধিক্য। বলাই বাহুল্য, বাম আমলে খাদ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল আমলে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী।
স্বভাবতই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরব হয়েছে বিজেপি। মেখলিগঞ্জের বিজেপি টাউন সভাপতির দাবি, ‘বাম আমল থেকেই পরিবারকে সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিয়ে আসছেন পরেশ অধিকারী। মেখলিগঞ্জের বুকে প্রায় ২৫ জন নিকট আত্মীয়কে তিনি সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করিয়েছেন। অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।’ একই সঙ্গে কটাক্ষ করে তাঁর উক্তি, ‘মন্ত্রীর বাড়ির কুকুরও যদি ঠিক মতন পড়াশোনা করত তাহলে তারই কপালে অবধারিত ভাবে জুটে যেত সরকারি চাকরি। ‘