বিজেপি-সিপিএমের খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত ত্রিপুরা, হামলা থেকে বাঁচতে ATM-এ আশ্রয় বাম নেতাদের! মৃত এক

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বুধবার শাসক-বিরোধী সংঘর্ষে রীতিমতো কেঁপে উঠল ত্রিপুরার (Tripura) মাটি। এদিন ত্রিপুরার চড়িলাম (Charilam) আরডি ব্লকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ডেপুটেশন কর্মসূচিতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করেছিলেন সিপিএম (CPM) কর্মী-সমর্থকরা। সেই সভাস্থলেই বক্তব্য রাখেন সিপিএমের নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা, মহকুমা সম্পাদক পার্থপ্রতিম মজুমদার-সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।

এদিন জমায়েত শেষে ব্লকে গিয়ে ডেপুটেশন দেওয়ার কথা ছিল সিপিএম এর । অন্যদিকে সুতারমুড়ায় জনজাতি মোর্চার জনসভায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিজেপির কার্যালয় প্রাঙ্গনে কিছু কর্মী সমর্থক ভিড় করেছিল । অভিযোগ, সেই সময় জমায়েত করা সিপিএম সমর্থকদের একাংশ বিজেপির কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট, কাঁচের বোতল ছুঁড়তে থাকে। জানা যায়, বিজেপি কার্যালয়ে হামলা চালায় সিপিএম কর্মীরা। ঘটনায় আহত হন বিজেপির কয়েকজন কর্মী-সমর্থক ।

খবর জানাজানি হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিজেপির বিপুল পরিমান কর্মী-সমর্থক। এরপরই দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। রণক্ষেত্রের আঁকার ধারণ করে ঘটনাস্থল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার খবর পেয়ে বিশালগড় মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুল দাস, বিশালগড় থানার ওসি বাদল সাহা, বিশাল পুলিশবাহিনী, টিএসআর সিআরপিএফ নিয়ে চড়িলাম পৌঁছনোর। শুরু হয় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কাজ। রক্তাক্তদের উদ্ধার করে দমকলের গাড়ি করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন পুলিশ আধিকারিকরা। এরপরও দ্বন্দ্ব থামে নি। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায়-দফায় চলে সংঘর্ষ।

গন্ডগোল থেকে রেহাই পেতে সিপিএম বিধায়ক ভানুলাল সাহা-সহ কয়েকজন নেতা আশ্রয় নেন একটি এটিএম বুথে। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গিয়ে আহত হন মহকুমার এক কর্মরত সাংবাদিক। আহত হন পুলিশ কর্তারাও। অন্যদিকে, আহত সিপিএম সমর্থক শহীদ মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিশালগড় হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় আগরতলায়। সূত্রের খবর সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে।

CPM BJP

ঘটনার পর শুরু হয় দুই দলের অভিযোগের তীর ছোড়াছুড়ি। বিজেপির চড়িলাম মণ্ডল সভাপতি রাজকুমার দেবনাথ জানান, সিপিএমের সমর্থকরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অশান্তি সৃষ্টি করে বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা চালায়। এতে বিজেপির ৯ জন সমর্থক মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। তিনি আরও দাবি করেন সিপিএমের ক্যাডারদের কাছে বোমা সহ আগ্নেয়াস্ত্র মজুত ছিল।

অন্যদিকে, সিপিএম নেতা ভানুলাল সাহার অভিযোগ, বিজেপির সমর্থকরা প্রথমে হামলা চালায়, ঘটনায় ১২ জন সিপিএম সমর্থক মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। এর মধ্যে এক সিপিএম সমর্থক শহীদ মিঞার মৃত্যুর খবরও জানিয়েছেন তিনি। এককথায় দুইদলের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ত্রিপুরা। বুধবারের এই সংঘর্ষে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর