টাকাই দেয়নি মনমোহন সরকার! চন্দ্রযান নিয়ে কৃতিত্ব দাবি করা কংগ্রেসের কেলেঙ্কারি ফাঁস

বাংলা হান্ট ডেস্ক : বুধবার চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করার কয়েক ঘন্টা পরই, কংগ্রেসের (Congress) পক্ষ থেকে ইসরোর (Indian Space Research Organisation) বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান হয়। এরপরই পুরো মিশনের জন্য কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করে শতাব্দী প্রাচীন এই দল।

খাড়গের টুইট : কংগ্রেস সভাপতি এবং রাজ্যসভার সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে টুইটারে একটি দীর্ঘ পোস্ট লেখেন এই প্রসঙ্গে। প্রথমে তিনি চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যের জন্য দেশকে অভিনন্দন জানান এবং তারপরই এই মিশনের জন্য নেহরুকে কৃতিত্ব দিয়ে দেন। খাড়গে লেখেন, ‘আমরা আমাদের বিজ্ঞানী, মহাকাশ প্রকৌশলী এবং গবেষকদের জন্য অত্যন্ত গর্বিত। এই মিশনটিকে ভারতের বিজয়তালিকায় নথিভুক্ত করার জন্য জড়িত সকলের অসাধারণ কঠোর পরিশ্রম, অতুলনীয় চাতুর্য এবং উৎসর্গের কাছে গভীরভাবে ঋণী।’

modi chandrayaan

এই সাফল্য নেহেরুর : প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর আরও প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এই সাফল্যগুলি পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর দৃষ্টিভঙ্গির এক একটি প্রমাণ। নেহরু এবং আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করেছিলেন যে বিজ্ঞানের প্রতি সমালোচনামূলক অঙ্গীকারই চেতনাকে প্রজ্বলিত করে। বিজ্ঞানই আমাদের সদ্য স্বাধীন জাতির বিকাশের চেতনাকে চালিত করতে পারে। এই দৃষ্টিভঙ্গিই পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীরা কেবল অনুসরণ করেন।’

কৃতিত্ব কংগ্রেসের : কংগ্রেস সভাপতি আরও বলেন, ‘আমাদের দল সর্বদা বিশ্বশান্তি এবং সহযোগীতার অগ্রগতিতে বিশ্বাস করে। চাঁদের পৃষ্ঠে বিক্রম ল্যান্ডারের অবতরণ, শান্তিপূর্ণ এবং কল্যাণমূলক উদ্দেশ্যে বিজ্ঞানকে ব্যবহার করার প্রতিশ্রুতির একটি গৌরবপূর্ণ স্বীকৃতি।’ এরই মধ্যে, কংগ্রেস পার্টির অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল একটি গ্রাফিক্স শেয়ার করে। এই ছবিতে চন্দ্রযান 3-এর সাফল্যের কৃতিত্ব ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দেওয়া হয়।

কংগ্রেসের কৃতিত্বেই মিশন মঙ্গল : কংগ্রেসের পক্ষ থেকে লেখা হয়, ‘স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দূরদৃষ্টি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ভিত্তি স্থাপন করে।’ কংগ্রেস আরও দাবি করে, চন্দ্রযান ১ এবং মঙ্গলযান মিশন কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বেই দুর্দান্ত সাফল্য লাভ করে।

ভুয়ো দাবি কংগ্রেসের : কংগ্রেস যতই চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যের কৃতিত্বের দাবি করুক, বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে। কংগ্রেস সরকারের আমলেই চন্দ্রযান ৩ মিশনের সময় ইসরোকে টাকা দিতে আপত্তি করেছিল। ২০১৩ সালে, ইসরো চন্দ্রযান ৩-এর জন্য একটি ল্যান্ডার এবং রোভার রোভার তৈরির জন্য অতিরিক্ত কিছু টাকা দাবি করে। কিন্তু সেই টাকা আসতে লেগে যায় সারা বছর। এমনকি তৎকালীন ইসরোর চেয়ারম্যান কে রাধাকৃষ্ণানকেও এই বিষয়ে মন্তব্য করতে শোনা যায়।

chandrayaan 3 (2)

 

নেহেরু কি আদৌও কৃতিত্বের দাবিদার? ভারতের যা কিছু সাফল্য করেছে সবকিছুর জন্যই কংগ্রেস নেহেরু এবং তার বংশধরদের কৃতিত্ব দিতে আগ্রহী। তবে বাস্তবটা হল, প্রায় সমস্ত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান, এমনকি সশস্ত্র বাহিনীও যখন টাকার জন্য লড়াই করছে তখন নেহেরু ও গান্ধী ‘পরিবার’ তাদের প্রধানমন্ত্রী পদে অসামান্য বিলাসিতা উপভোগ করেছে। এমনই দাবি একাধিক মহলের।

গান্ধী পরিবারের বিলাসী জীবন : রাজীব গান্ধী, তাঁর পরিবার, এবং তাঁর ইতালীয় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সঙ্গে লাক্ষাদ্বীপের একটি জনবসতিহীন দ্বীপে ছুটি কাটিয়ে আসেন। ওই দ্বীপটি বিশেষ ভাবে সাজানো হয়েছিল তাঁদের জন্যই। ১৯৮৭ সালে তৎকালীন ভারতের একমাত্র বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিরাটে চেপে সেখানে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। রাজীব গান্ধী এবং তার আত্মীয়দের ওই দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি জাহজও মোতায়েন করা হয়।

আরও পড়ুন : ‘ভারত চাঁদে পৌঁছে গেছে আর আমরা…!’, চন্দ্রযান সফল হতেই হতাশ পাকিস্তানিরা যা বললেন …

নেহেরুর ব্যায়বহুল জীবনযাত্রা : নেহেরু, আজীবনকাল তাঁর ব্যয়বহুল জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত। তাঁর কাপড় কেচে পরিষ্কার করে আসত বিদেশ থেকে। তাঁর প্রিয় সিগারেটের প্যাকেট আনার জন্য প্রস্তুত ছিল একটি বিমান। জানা যায়, নেহরুর ‘বিশেষ প্রিয়’ এডউইনা মাউন্টব্যাটেন ৫৯ বছর বয়সে, ১৯৬০ সালে মারা যান। লর্ড মাউন্টব্যাটেন তাঁর ইচ্ছা অনুসারে দেহ সমুদ্রে সমাধিস্থ করেন। সেই সময় নেহেরু ভারতীয় নৌবাহিনীর ফ্রিগেট আইএনএস ত্রিশুলকে এসকর্ট হিসাবে পাঠিয়েছিলেন। এটা সেই সময় হিমালয়ের কয়েক হাজার ফুট উচ্চতায় ভারতীয় সেনাদলের নূন্যতম বরফের পোষাক এবং উপযুক্ত জুতাও জুটত না। তাহলে কি আজ ভারতের সাফল্যের জন্য নেহেরু বা গান্ধী পরিবারের কাউকে কৃতিত্ব দেওয়া যায়? এই প্রশ্নই উঠে আসছে একাধিক মহল থেকে।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর