বাংলাহান্ট ডেস্ক : সাধারণ মানুষ নিখরচায় যাতে চিকিৎসা পরিষেবা পান তার জন্য ’স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই ’স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড নিয়ে নজিরবিহীন জালিয়াতির ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে একই রোগীর নামে-বেনামে একাধিক প্যাকেজ, বাড়তি ওষুধের ভুয়ো বিল পেশ, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা (মেডিক্যাল টেস্ট), ভুয়ো রিপোর্ট জমা-সহ একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের দায়ে রাজ্যের ২৩টি বেসরকারি হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার মোট অঙ্ক ৫ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, মালদা, বীরভূম, নদিয়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো ১০টি জেলার ২৩টি নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত দুর্নীতি ধরা পড়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বুধবার এই ঘোষণা করে বলেন, ‘‘আমরা বেসরকারি হাসপাতালগুলির উপর গোয়েন্দাগিরি করতে চাই না। কিন্তু দুর্নীতির কারণে মানুষ দূরবস্থায় পড়লে পদক্ষেপ করতেই হবে।’’ সাজাপ্রাপ্ত নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে অধিকাংশই জরিমানার টাকা দিলেও কয়েকটি হাসপাতাল এখনও দেয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনে ওই নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে।’’
এর পাশাপাশি, যাদের সব থেকে বেশি দরকার তারাই পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। এক আবেদনকারীর কথায়, আমার তিন কূলে কেউ নেই। স্বামীর পেশনের টাকায় দিন কাটে। রোগ বালাই হলে কোথায় যাব? আমারই তো কার্ডটা সবার আগে দরকার। কিন্তু কার্ড হাতে পাচ্ছি কই?
এদিকে, সিঙ্গল কার্ড নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও অভিযোগ। তাই একজন ব্যক্তির জন্য একটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিতে ভালো করে নথি খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দফতর। ফলে, গোটা রাজ্যেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে ঘিরে তীব্র জলঘোলা হচ্ছে।