বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে বাংলা ছেড়ে গরু পাচার কাণ্ডের (Cattle Smuggling Case) অন্যতম মূল অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) নিয়ে মঙ্গলবার দিল্লি পাড়ি দিয়েছে ইডি (ED)। সেদিনই মধ্যরাতে টানটান উত্তেজনার মধ্যে বিচারকের বাড়িতে সওয়াল-জবাব পর্ব শেষ হয় কেষ্টর। শুনানি শেষে যখন ইডি-র লক আপে ঢোকানো হয়, সময় তখন রাত দুটো। বুধবার দুপুরে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে তার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর পর থেকেই শুরু হয়েছে টানা জিজ্ঞাসাবাদ।
সূত্রের খবর, গরু পাচারে আয়ের সমস্ত টাকা কোথায় গেল? কোন কোন রাজনৈতিক প্রভাবশালীর পকেটে গরু পাচারের টাকা ঢুকেছে? কী ভাবে তা হাতবদল হয়েছিল? কী ভাবে গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা হয়েছিল? এই চার প্রশ্নবাণেই অনুব্রতকে বিধঁতে শুরু করেছেন ইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরা।
শুক্রবার দুপুরে কেষ্ট মণ্ডলকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে তোলা হবে। সেখানে অনুব্রতকে ফের ইডি হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানাবেন নিতে চাইবেন তদন্তকারীরা। জানিয়ে রাখি, কেষ্টকে কোর্টে তোলার আগে যথাসম্ভব জিজ্ঞাসাবাদ এগিয়ে রাখতে ইডি-র স্পেশাল ডিরেক্টর সনিয়া নারাং, অ্যাস্টিট্যান্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ কুমারের নেতৃত্বে তৈরী হয়েছে বিশেষ দল।
অন্যদিকে, যে বিষয়টি নিয়ে বারবার উদ্বেগ তৈরী হচ্ছে তা হল অনুব্রতের শারীরিক অবস্থা। প্রসঙ্গত, কলকাতা থেকে যখন তাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন বিমানবন্দরেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে বলে দাবি করেছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই তার আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলে
রেখেছেন। ইডি-র হেফাজতে থাকা কালীন কেষ্টর শারীরিক অবস্থার কোনো রকম অবনতি হলে তার দায় তদন্তকারীদের উপরে এসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পুরো জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে রাখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
পাশাপাশি অনুব্রতের আইনজীবী মুদিত জৈন দিল্লি পৌঁছেই বলেছিলেন, তার মক্কেলের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। রাজধানী পৌঁছে রাতে সরাসরি অনুব্রতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। পরে পাঁচ মিনিটের জন্য মাত্র এক জন স্বাস্থ্যপরীক্ষা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। বয়স হয়েছে কেষ্টর। উপরন্তু দিল্লি যাওয়ার পর থেকে বিশ্রাম নেওয়ার সময়টুকুও ঠিক মতো দেওয়া হয়নি তাকে। অনুব্রতের চোখ-মুখ দেখে তার শারীরিক অবস্থা ভাল লাগছে না বলেও বিচারককে জানিয়েছিলেন আইনজীবী।
গরু পাচার মামলায় দীর্ঘদিন থেকে জেলবন্দিই ছিলেন তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডল। ইডি প্রথম থেকেই দাবি করে চলেছে গরু পাচারের একটা বড় অংশের টাকা নিঃসন্দেহে অনুব্রত মণ্ডলের ঝুলিতে গিয়েছে। তবে বাকি টাকা রাজ্যের কোন কোন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের কাছে গিয়েছে, কী ভাবে পৌঁছেছে, অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই টাকার গতিপথেরই এখন খোঁজ করা হবে বলে সূত্রের খবর।