বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাজ্যজুড়ে সবুজ সুনামির মধ্যেও একখন্ড বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতন তাহেরপুর দখল করল বাম শিবির। তাহেরপুর পুরসভা দখল যেন হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেই অক্সিজেন জোগালো সিপিএম কে। রাজ্যে বিজেপি এবং কংগ্রেস যেখানে পুরসভা দখলের লড়াইতে খাতাই খুলতে পারেনি, সেখানে বামেদের এই জয় নিঃসন্দেহেই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কার্যতই বঙ্গ রাজনীতি থেকে মুছে গেছিল সিপিএমের নাম। তারই মাত্র দশ মাসের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়ে একটি পুরসভা দখল করল বাম শিবির। রাজ্যে যেখানে তৃণমূলের জোয়ার সেখানে কীভাবে সম্ভব হল এই আপাত অসম্ভব কাজটি?
তাহেরপুর পুরসভায় মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ১৩টি। এই ১৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টিতেই জয় লাভ করেছে সিপিএম। বাকি ৫টি গেছে তৃণমূলের হাতে। কিন্তু কী তাদের জয়ের গোপন রহস্য? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে নবীনদের উপর ভরসাই তাহেরপুরে জয় এনে দিল সিপিএমকে। এই পুরসভায় লাগাতার কাজ চালিয়ে গেছে বামেরা। জনসংযোগ অব্যাহত রাখতে প্রতিনিয়ত তারা পৌঁছে গিয়েছিল মানুষের ঘরে ঘরে। প্রার্থী করা হয়নি কোনও দলবদলু নেতাকেও। যা কি না তুরুপের তাসের মতন কাজ করেছে এই পুরসভায়। ফলে বিজেপি ঢুকতেই পারেনি কোনও ওয়ার্ডে। কমেছে তৃণমূলের আসন সংখ্যাও।
তাহেরপুর বরাবরই বাম শিবিরের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। ২০১৭ এর পুরভোটেও এই পুরসভা ছিল বামেদের দখলেই। সেবার অবশ্য ৭টি আসন পেয়েছিল বামেরা। তৃণমূলের হাতে ছিল ৬টি আসন। এবার একটি আসন বেড়েছে বাম শিবিরের। ২০২২ এর পুরসভায় ৮টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে সিপিএম। একটি আসনে কমে তৃণমূলের সংখ্যা ৫। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে এখানে বেশ কিছুটা এগিয়ে ছিল বিজেপিই। ভোটের শতাংশের নিরিখে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছিল বামেরা। সেই স্থান থেকে প্রথম স্থানে উঠে এসে পুরসভা দখল কার্যতই বড় সাফল্য রাজ্যের সিপিএম শিবিরের কাছে।