বাংলাহান্ট ডেস্ক : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর বাংলা থেকে লাল প্রায় মুছে গেছে বললেই চলে। তবুও অষ্টম বামফ্রন্টের আশায় লড়াই জারি রয়েছে সিপিএমের। কিন্তু এবার পুরভোটের মুখে আবারও বিরাট ভাঙনের মুখে রাজ্যের লাল শিবির। সোনামুখীর সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর যোগ দিলেন তৃণমূলে। ঘটনার জেরে কার্যতই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। যথেষ্ট অস্বস্তিতেই বামেরাও।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে। গতকালই বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর এবং সোনামুখীতে পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বাঁকুড়া জেলা সিপিএম। কিন্তু তাতে ছিল না বাঁকুড়ার বহু পুরোনো বাম নেতা তথা ১০ বছরের প্রাক্তন কাউন্সিলর কুশল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। সোনামুখীর এরিয়া কমিটির সম্পাদকও ছিলেন তিনি। কিন্তু এরপরই সব্বাইকে চমকে দিয়ে গতকাল রাতেই তৃণমূলে যোগ দেন এই সিপিএম নেতা। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিতে দেখা যায় বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোক মুখোপাধ্যায়কে।
দলবদলের পর কুশল মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি উন্নয়নের শরীক হতেই তিনি দল বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানান, ‘ভারতকে বিজেপি মুক্ত করতে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে হবে। যেকথা সিপিএমের দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিজেপি মুক্ত করতে গেলে সমস্ত বিরোধী দলকে এককাট্টা হতে হবে। এটা প্রথমত রাজনৈতিক লাইন। দ্বিতীয়ত, উন্নয়নটা যেভাবে এই দশ বছরে তরান্বীত হয়েছে, তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি, সাধারণ সৈনিক হিসেবে। সিপিএমের প্রতি আর কোনো মোহ নেই। সব মোহ ত্যাগ করে চলে এসেছি।’
বাঁকুড়ার বাম সংগঠনে কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাম ছিল। ২০০৫ থেকে ২০১৫ অবধি কাউন্সিলর থাকার পাশাপাশি সোনামুখী এলাকার সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদকও ছিলেন তিনি। তাঁর এহেন বিশ্বাসঘাতকতায় যে অস্বস্তিতে পড়বে দল তা বলাই বাহুল্য। তবে ব্যাপারটিকে স্বীকার করতে নারাজ বাম শিবির। এই ব্যাপারে বাঁকুড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক অজিত পাতির দাবি, ‘আমি শুনেছি ব্যাপারটা। আমাদের এলাকার কাউন্সিলর ছিলেন। পৌরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন। তিনি শুনলাম তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কয়েকদিন ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল কথাটা। এরকম স্বার্থপর লোক যত তাড়াতাড়ি দল থেকে যাবে ততই মঙ্গল।’ যারা স্বার্থান্বেষী তারা কমিউনিস্ট হতে পারে না, এমনটাই দাবি বাম শিবিরের।
এরকম স্বার্থপর নেতাদের খুঁজে খুঁজে দল থেকে বার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় তাঁকে। তবে পুরভোটের আগে সিপিএমের গুরুত্বপূর্ণ নেতার এই দলপরিবর্তনে যে অষ্টম বামফ্রন্টের লড়াইতে আরও এক পা পিছিয়ে গেল বামেরা তা বলাই বাহুল্য।