বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুমাস ধরে বর্তমান সরকারের আমলে হওয়া নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে তোলপাড় রাজ্য। তৃণমূলও ছাড়ার পাত্র নয়, উল্টে বাম আমলে ‘চিরকুটে’ চাকরি প্রসঙ্গ তুলে এনেছে শাসকদল। সিপিএম (CPM) জামানায় হাজার হাজার চাকরি চিরকুট সুপারিশে হয়েছে, এমনটাই অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC)। তবে এই বিষয়ে কিছু জানেননা বলেই মন্তব্য করে আসছেন বাম নেতা বিমান বসু।
দিন কয়েক থেকে সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর চাকরিকে ইস্যু করে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শাসকদলের দাবি সুপারিশের মাধ্যমেই চাকরি হয়েছিল মিলিদেবীর। সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি নিয়ে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিমান বসু বলেছিলেন বাম আমলে চিরকুটে চাকরি হত না। এবার সুজনবাবুর বিরুদ্ধে ‘চিরকুটে চাকরি’ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এল। ২০০৭ সালের দুটি ‘চিরকুট’ নিয়েই শুরু হয়েছে তরজা।
কী সেই চিরকুট? চিরকুট গুলিতে দেখা যাচ্ছে, তদানীন্তন সিপিএম সাংসদ সুজন চক্রবর্তী সাংসদের লেটার হেড ব্যবহার করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের পার্টি পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি ‘করে দিতে হবে’ বলে চিরকুট পাঠাচ্ছেন। একটি চিরকুট পাঠানো হয়েছিল তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীকে। অন্যটি, সুভাষবাবুর সে সময়কার কনফিডেন্সিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিএ) নিখিল পালকে পাঠিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী।
যদিও এই দুই চিরকুটের সত্যতা যাচাই করেনি বাংলা হান্ট টিম।
কী লেখা চিরকুটে? রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরে চাকরি করে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে ০৫.০৫.০৭ প্রথম চিরকুট সুভাষ চক্রবর্তীকে প্রেরণ করেন তিনি। সুজনবাবু লেখেন, “কমরেড সুভাষ চক্রবর্তী, আশাকরি ভালো আছেন। পত্রবাহককে পাঠালাম। ভালো ছেলে। মগরাহাটের পার্টি পরিবারের সদস্য। পুল কারের জন্য। ইন্টারভিউতে পাশ করেছে। যদি দেখে নেন ভালো হয়। খুবই ভালো ছেলে।’ যেই বয়ানের নীচে তারিখ সহ সুজনবাবুর নিজের সইও রয়েছে।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় চিরকুট সিএ নিখিল পালকে প্রেরণ করে সুজনবাবু লেখেন, ‘কমরেড নিখিল/ সিএ টু সুভাষ চক্রবর্তী, কথামতো পত্রবাহক কমরেডকে পাঠালাম। প্র্যাটিকাল টেস্টে পাশ করেছে। করে দিতে হবে।’ কিছুটা নির্দেশ আকারে দেওয়া এই চিরকুটেও সুজনবাবুর সই সহ তারিখ ০৫.০৫.০৭ এর উল্লেখ রয়েছে।
এই দুই চিরকুট সামনে আসতেই জোর চৰ্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও চিরকুটে চাকরির এই লেটার হেড লেখার কথা নিজ মুখে মেনেও নিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। তবে যুক্তি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘আমি সাংসদ থাকার সময় কমরেড সুভাষ চক্রবর্তীকে একটি চিঠি লিখেছিলাম। গ্রামের একটি গরিব ছেলে পুলকারের চাকরির ইন্টারভিউতে পাশ করেছিল। তার যাতে খারিজ না হয়, তা চেয়েছিলাম। এর সঙ্গে চাকরি বিক্রির সম্পর্ক নেই।’