বাংলাহান্ট ডেস্ক : গতকালই বেড়েছে মহার্ঘ ভাতা (DA)। ৪ শতাংশ বেড়ে কেন্দ্রীয় সরকার তার কর্মীদের এখন ডিএ দিচ্ছে ৩৮ শতাংশ। ডিএ-দৌড়ে তাদের আরও বেশ খানিকটা পিছিয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নতুন ব্যবস্থায় কেন্দ্রের সঙ্গে বাংলার ডিএ-ব্যবধান বেড়ে হয়েছে ৩৫%।
ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের দায়ের করা ডিএ সংক্রান্ত নির্দেশ পুনর্বিবেচনা মামলা খারিজ করে দিয়েছে। তা নিয়ে বেজায় বিপাকে তৃণমূল সরকার। এর উপর কেন্দ্র নতুন ডিএ ঘোষণার পরই রাজ্যের বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে পথে নেমে আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিল। এখন পরিস্থিতি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জন্য যথেষ্ট খারাপ তা বলাই বাহুল্য।
কর্মী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় কেন্দ্র ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন হারে ডিএ দিতে শুরু করে। তার পরে জুলাই ও জানুয়ারি, বছরে দু’বার রীতি মেনে ডিএ বাড়াতে থাকে তারা। বুধবার কেন্দ্র যে-ডিএ ঘোষণা করেছে, তা কার্যকর হয় গত জুলাই থেকে। ফলে এখন কেন্দ্রীয় কর্মীদের ডিএ-র পরিমাণ বেড়ে হচ্ছে ৩৮%। বঙ্গে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় ২০২১-এর ১ জানুয়ারি থেকে ৩% ডিএ দেওয়ার রীতি চালু রয়েছে।
কর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ, কয়েক বছর চাকরি করা সর্বনিম্ন বেতনভুক কর্মচারীরও ২০২২-এর ১ জুলাই থেকে প্রতি মাসে ৭০০০ টাকা লোকসান করছে। ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের মাসে লোকসান হচ্ছে ১০,০০০ টাকারও বেশি।
মামলাকারী কর্মী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আদালত ডিএ মিটিয়ে দিতে বলা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার টালবাহানা করে চলেছে। আমরা সরকারের হাত থেকে ডিএ আদায় করেই তবে ছাড়ব। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি এবার পথে নেমেও আন্দোলন করব।’ কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের অভিযোগ, ‘রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা চরম আর্থিক বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। প্রতারণা করছে তৃণমূল সরকারই। পুজোর ছুটির পরে আবারও রাস্তায় নামব আমরা।’
শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন, শিক্ষক সংগঠনগুলিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনের করার জন্যও আহ্বান জানান তিনি। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের জানান, ‘২০০৯ সালের রোপা রুলে বামফ্রন্ট সরকার ডিএ-র স্বীকৃতি দেয়। এটা কর্মচারীদের আইনি অধিকার, সরকারের দয়ার দান নয়। রাজ্য সরকারের কথা না শুনলে আগামী দিনে প্রশাসনকে স্তব্ধ করার মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব। কাল সারা রাজ্যে টিফিনের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে।’