বাংলা হান্ট ডেস্ক: নববর্ষের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বড় উপহার, বিহারে ৫% বাড়ল ডিএ (Dearness Allowance)। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিহার মন্ত্রিসভার বৈঠকে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। মোট ১৯টি এজেন্ডা অনুমোদিত হওয়ার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। মন্ত্রিসভা জানিয়েছে, রাজ্যের কর্মচারী এবং পেনশনভোগীরা ৫ শতাংশ অতিরিক্ত ডিএ পাবেন, যা কার্যকর হবে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে। এই সিদ্ধান্তে লক্ষ লক্ষ কর্মচারী সরাসরি উপকৃত হবেন। ষষ্ঠ কেন্দ্রীয় বেতন স্কেলের আওতাধীনদের ডিএ ২৫২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৫৭ শতাংশ হবে এবং পঞ্চম বেতন স্কেলে থাকা কর্মী ও পেনশনভোগীদের ডিএ ৪৬৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৭৪ শতাংশ হবে।
বিহারে বাড়লো মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance)
বৈঠকে প্রশাসনিক কাঠামোতেও বড় পরিবর্তনের অনুমোদন দেওয়া হয়। বিহার সরকারের বিদ্যমান ৪৫টি বিভাগের সঙ্গে আরও তিনটি নতুন বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে—যুব কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়ন বিভাগ, উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন বিভাগ। প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ বিভাগের নাম পরিবর্তন করে দুগ্ধ মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ বিভাগ করা হয়েছে। একইভাবে শ্রম সম্পদ বিভাগের নাম পরিবর্তন করে শ্রম সম্পদ ও অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বিভাগ এবং শিল্প, সংস্কৃতি ও যুব বিভাগের নতুন নামকরণ হয়েছে শিল্প ও সংস্কৃতি বিভাগ হিসেবে। এ ছাড়া শিল্প বিভাগের অধীনে কারিগরি উন্নয়ন অধিদপ্তরের নাম পরিবর্তন করে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ অধিদপ্তর করারও অনুমোদন দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:মমতা-শুভেন্দুকে হারানোর পণ হুমায়ুনের! নন্দীগ্রাম-ভবানীপুরেও দেবেন প্রার্থী, করলেন ঘোষণা
শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পাশ হয়েছে। যুব সমাজের দক্ষতা বাড়াতে জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক প্রস্তাবিত ছাত্র দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিকে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্থ ‘শিক্ষা ভারতী প্রতিরোধ প্রকল্প’-এর আওতাধীন ভিক্ষাবৃত্তি প্রতিরোধ বিধি ১৯৫৪–এর সংশোধনীও পাস হয়েছে। একই সঙ্গে বিহার ডকুমেন্ট রাইটার সংশোধনী বিধি ২০২৫ অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রস্তাবেও সম্মতি জানানো হয়েছে, যার ফলে বিহার রিমোট সেন্সিং অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারকে রাজ্যের সব বিভাগ আর্থিক ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করতে পারবে।
নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত হিসেবে নীতিশ মন্ত্রিসভা ভারতীয় নাগরিক নিরাপত্তা কোডের অধীনে ‘বিহার ইলেকট্রনিক অর্ডার বিধি ২০২৫’ এবং ‘বিহার নির্বাহী সংশোধনী বিধি ২০২৫’ অনুমোদন করেছে। এছাড়া গয়া ও মুঙ্গের জেলাকে সিভিল ডিফেন্স জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে সিভিল ডিফেন্স জেলা ইউনিটের জন্য মোট ১৪টি পদ সৃষ্টির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শহীদ বিএসএফ সাব–ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ ইমতিয়াজের ছেলের চাকরির অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে, যা মন্ত্রিসভার সামাজিক দায়বদ্ধতার বার্তা বহন করে।

আরও পড়ুন:২০২৬-এর ১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে অষ্টম বেতন কমিশন? রাখঢাক না রেখে সংসদে কী জানাল সরকার?
খনি ও ভূতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাঠামোগত পরিবর্তনও বৈঠকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। অধিদপ্তরটিকে দুটি পৃথক সত্তায়—খনি অধিদপ্তর এবং অনুসন্ধান অধিদপ্তরে—পুনর্গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি খনি অধিদপ্তরকে আবার দুটি উপ–অধিদপ্তরে বিভক্ত করা হয়েছে—খনি উপ–অধিদপ্তর এবং নিরাপত্তা উপ–অধিদপ্তর। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নতুন পদ সৃষ্টি ও পুনর্গঠনেরও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সব মিলিয়ে নীতিশ কুমারের মন্ত্রিসভার এই বৈঠকটি প্রশাসনিক রূপরেখা এবং কর্মচারী–কল্যাণে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।












