বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এ. পি. জে. আবদুল কালাম ( A. P. J. Abdul Kalam) ব্যক্তিত্বের কোনও তুলনা হয় না। তিনি একাধারে ছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতি, দুর্দান্ত চিন্তাবিদ, লেখক এবং বিজ্ঞানী। তাঁর প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। আবদুল কালাম ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই মেঘালয়ের শিলংয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ ওনার অষ্টম মৃত্যু বার্ষিকী। আসুন জেনে নিই ওনার সম্বন্ধ্যে কিছু তথ্য।
২০০২ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরেও তাঁর সমস্ত সরলতা দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিল। তাদের দরজা সর্বদা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। তিনি জনগণের রাষ্ট্রপতি হিসাবেও পরিচিত। আবদুল কালামের জন্ম ১৫ অক্টোবর তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে। ওনার পরিবার নৌকা তৈরি করতেন।
কালামের পিতা জেলেদের নৌকা ভাড়া দিতেন। শৈশব থেকেই কালামের চোখে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তবে, সে সময় পরিস্থিতি এতটা ভাল ছিল না। স্কুল থেকে আসার পর তিনি কিছুক্ষণ বসে থাকতেন তার বড় ভাই মোস্তফা কালামের দোকানে, যা রামেশ্বরম রেলওয়ে স্টেশনে ছিল।
এরপরে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে ট্রেনটি যখন রামেশ্বরম রেলওয়ে স্টেশনে থামল, তখন চলন্ত ট্রেন থেকে সংবাদপত্রের বান্ডিলগুলি ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তার ভাই শামসুদ্দিনের এমন একজনের দরকার ছিল যিনি তাকে ঘরে ঘরে সংবাদপত্রগুলি পেতে সহায়তা করতে পারেন, তখন কালাম এই দায়িত্বটি গ্রহণ করেছিলেন।
স্কুল পাশ করার পর কলেজে পড়ার জন্য বৃত্তি পান আবদুল কালাম। এরপর তিনি তিরুচিরাপল্লির সেন্ট জোসেফ কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৪ সালে সেখান থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন তিনি। এরপর আবারও বৃত্তি পেয়ে চেন্নাইয়ে গিয়ে এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
এপিজে আবদুল কালামের স্বপ্ন ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান চালক হওয়ার। ওনার ক্লাসের আটজনকে বায়ুসেনার বিমানচালানোর জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত তিনি ছিলেন নবম স্থানে। সেদিনের সেই ঘটনা আবদুল কালামের জন্য দুর্ভাগ্য হলেও, গোটা ভারত তথা বিশ্বের জন্য সৌভাগ্য ছিল। কারণ আবদুল কালাম বিমান চালানোর জন্য জন্মগ্রহণ করেন নি, ওনার ভাগ্যে অনেক বড় কিছু লেখা ছিল।
বিমান চালক হতে না পারলেও, নিজের অদম্য চেষ্টায় ভারতের মিসাইল ম্যান হয়ে ওঠেন তিনি। ১৯৯৮ সালে পোখরানে পরমাণু পরীক্ষণের অন্যতম কারিগর ছিলেন ভারতের মিসাইল ম্যান আবদুল কালাম। ১৯৬৩-৬৪ সালে পড়াশোনার জন্য মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসাতেও গিয়েছিলেন তিনি। ওনার অসামান্য অবদানের কীর্তি ভারতের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রইবে। মহাকাশ ও পরমাণু গবেষণায় অমূল্য অবদানের জন্য পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ ও ভারতরত্নে সম্মানিত করা হয়েছিল ওনাকে।