বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। গরু পাচার মামলায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসায় বেকায়দায় কেষ্ট। এ মামলায় আগামীকাল ফের একবার তাঁকে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হতে চলেছে। এর মাঝে এদিন আদালতের বিচারককে একটি হুমকি চিঠি প্রদান ঘিরে শুরু হয় চাঞ্চল্য। অনুব্রতকে জামিন না দিলে বিচারককে মাদক মামলায় ফাঁসানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় চিঠিটিতে। যদিও যার তরফ থেকে এই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ, সম্পূর্ণ ঘটনায় তিনি হতবাক আর এবার এ প্রসঙ্গে ফেসবুক পোস্টে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দেবাংশ ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya)।
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সম্পত্তি এবং অন্যান্য একাধিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য সামনে উঠে আসে। সেই ধারা বজায় রেখেই এদিন আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীকে একটি হুমকি চিঠি দেওয়া হয়, যেখানে তাঁকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুঁশিয়ারিকে কেন্দ্র করে বাধে বিতর্ক। তবে যার বিরুদ্ধে এই চিঠিটি পাঠানোর অভিযোগ, সম্পূর্ণ ঘটনায় তিনি হতবাক।
উল্লেখ্য, চিঠিটিতে প্রেরকের জায়গায় নাম রয়েছে বর্ধমান এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হেড ক্লার্ক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের। যদিও এ ঘটনায় তাঁর সাফ জবাব, “হুমকি চিঠি প্রসঙ্গে আমি কিছু জানি না। এক্ষেত্রে আমার সই এবং স্ট্যাম্প জাল করা হয়েছে। সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্ত করা হোক।” ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, তবে এর পিছনে কার হাত রয়েছে? যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, আজকের এই ঘটনা আদতে অনুব্রত মণ্ডলের ‘প্রভাবশালী’ হওয়ার বিষয়টিকেই সামনে এনেছে আর এবার এ প্রসঙ্গে ফেসবুক পোস্টে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য।
দেবাংশু লেখেন, “বিচারককে চিঠি লিখে বলা হয়েছে, ‘অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন না দিলে গাঁজা কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে’। যিনি এই হুমকি দিচ্ছেন তিনি আবার তলায় নিজের সই করেছেন, স্ট্যাম্প মেরেছেন! ভাবা যায়? “প্রভাবশালী তত্ব” দেখিয়ে জামিন আটকাবেন? আটকান না! কে না করেছে? আইনি পথে করুন সেটা।”
পরবর্তীতে এ সম্পূর্ণ ঘটনাকে ‘ব্যর্থ’ চিত্রনাট্য বলে কটাক্ষ করেন দেবাংশু। তাঁর বক্তব্য, “এসব ছেঁদো কাজ করে বিচারপতিকে ভয় পাইয়ে, প্রভাবশালী তত্ত্বকে শক্তিশালী করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করছেন পরিচালক সাহেব! গত দুই মাস ধরে ভালো স্ক্রিপ্ট চলছিল। বেশ টানটান চিত্রনাট্য। তবে এমন দক্ষ পরিচালক চিত্রনাট্যের তুঙ্গে এসে এতটা কাঁচা কাজ করে ফেলবেন, ভাবতেও পারিনি! যাই হোক, সাহেব, মিছিমিছি চেষ্টা করছেন। ক্লাইম্যাক্স কিন্তু আপনার হাতে সত্যিই নেই।” এক্ষেত্রে দেবাংশু যে এ ঘটনাকে ঘুরিয়ে বিজেপির ‘চক্রান্ত’ বলেই তুলে ধরতে চেয়েছেন, তা বলা বাহুল্য। তবে আগামীকাল অনুব্রত মামলার শুনানিতে এর কি প্রভাব পড়ে, সেটাই দেখার।