বাংলা হান্ট ডেস্ক: সারা দেশজুড়েই এখন নারী-পুরুষ সমানাধিকারের লড়াই চলছে। পাশাপাশি, বর্তমান সময়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বড় বড় পদে আসীন রয়েছেন মহিলারা। এমতাবস্থায়, খেলার মাঠে মহিলাদের উপস্থিতি নিয়ে কার্যত সময় বেঁধে দিয়ে তীব্র বিতর্কের মুখে পড়ল মেদিনীপুরের একটি ক্লাব।
স্বাভাবিকভাবেই, ক্লাব কর্তৃপক্ষের এমন নোটিস ঘিরে সরগরম মেদিনীপুর শহর। ক্লাবের নোটিসে মহিলাদের উপস্থিতি নিয়ে রীতিমত সময় উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে স্পষ্টভাবে দেখা গিয়েছে সন্ধ্যা হলেই আর মাঠে থাকতে পারবেন না মহিলারা। আর তারপরই প্রশ্নের মুখে পড়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। যদিও, ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ দাবি করেছে শহরে আপাতত নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই।
ঠিক কি লেখা রয়েছে নোটিসে?
জানা গিয়েছে যে, মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটিতে অবস্থিত ডায়মন্ড স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে ঝোলানো হয়েছে এই বিতর্কিত নোটিস। সেই নোটিস অনুযায়ী, খেলার মাঠে থাকার সময় বিকেল ৪ টে থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত হলেও মহিলাদের থাকার সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই নোটিসে। জানানো হয়েছে, নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মহিলারা সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত এবং এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত থাকতে পারবেন সেখানে। অর্থাৎ মাঠে থাকার নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্ধ্যা নামলে মাঠ ছাড়তে হবে মহিলাদের। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারাও এমন নোটিসে কার্যত অবাক হয়ে গিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শীতল সাহা জানিয়েছেন, ‘‘একটু বেশি রাত হলে অন্য রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এখানে। তাই এই নোটিস দেওয়া হয়েছে।’’ পাশাপাশি, ক্লাবের সম্পাদক রূপক মণ্ডল জানিয়েছেন ‘‘ সম্প্রতি আপত্তিকর কিছু ঘটনা ঘটায় মহিলাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমরা এমন নোটিস দিয়েছি। তবে, আমরা কোনোরকম বিতর্ক চাইনা।”
মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া জানিয়েছেন, ‘‘নোটিসের বিষয়টি এইমাত্র শুনলাম। ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমি কথা বলব।’’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ডায়মন্ড স্পোর্টিং ক্লাবটি শহরের পুরনো ক্লাবগুলির মধ্যে অন্যতম একটি ক্লাব হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ক্লাবের কিছুটা দূরেই রয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই মূলত থাকেন এই চত্বরে। এমতাবস্থায়, মহিলাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। যদিও, মেদিনীপুরের এক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, ‘‘শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিকঠাকই রয়েছে।”