বাংলাহান্ট ডেস্ক: ডিপটেক খাত আগামী কয়েক বছরে ভারতের (India) অর্থনৈতিক বৃদ্ধির নতুন ইঞ্জিন হয়ে উঠতে চলেছে। রেডসিয়ার স্ট্র্যাটেজি কনসালট্যান্টসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের ডিপটেক বাজারের আকার ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে (প্রায় ২.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা) পৌঁছতে পারে। দেশের প্রতিরক্ষা খাতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, রোবোটিক্স, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এই প্রবৃদ্ধির মূল চালক হিসেবে কাজ করছে।
২০৩০-এর মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে ভারতের (India) Deeptech মার্কেট:
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের (India) প্রতিরক্ষা খাতে ডিপটেক ব্যবহারে বিনিয়োগ দ্রুত বাড়ছে। গত ১০ বছরে দেশের প্রতিরক্ষা বাজেট প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৮০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। রেডসিয়ার জানিয়েছে, এই বৃদ্ধির হার আমেরিকা ও চিনের মতো দেশগুলির তুলনায় অনেক বেশি। বর্তমান অর্থবছরে (২০২৫) ভারতের ডিপটেক শিল্পের আকার ৯ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ধরা হয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে ২.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৪৭ ঘণ্টায় আবহাওয়ার ‘নয়া খেল’ শুরু! কলকাতা নিয়েও বড় আপডেট দিল হাওয়া অফিস
রোবোটিক্স ক্ষেত্রেও ভারত (India) নিজের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করছে। বর্তমানে বিশ্বের রোবোটিক্স বাজারের মূল্য প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাড়তে বাড়তে ২৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। এর মধ্যে হিউম্যানয়েড রোবটের বাজারই প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ছুঁতে পারে বলে ধারণা। ভারতের একটি বড় সুবিধা হলো—এ দেশে রোবট তৈরির খরচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় ৭৩ শতাংশ কম। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় ভারতীয় সংস্থাগুলির বাড়তি সুবিধা মিলছে।
রেডসিয়ারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে ভারতের ডিপটেক খাতে স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সমৃদ্ধ প্রশিক্ষণ প্রযুক্তি এবং এনার্জি প্রপালশন টেকনোলজির মতো ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, বুদ্ধিমান ও টেকসই ড্রোন তৈরির ক্ষেএত্রে ভারত (India) দ্রুত অগ্রগতি করছে। প্রতিরক্ষা এবং বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে।

আরও পড়ুন: জনবহুল এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড নয়, স্পষ্ট নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট
প্রতিবেদনটি জানাচ্ছে, ডিপটেক আর ভবিষ্যতের প্রযুক্তি নয়, বরং ভারতে (India) এটি ইতিমধ্যেই বর্তমান অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। বিনিয়োগকারীদের কাছেও এই খাত এখন বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, কারণ এখানে শুধু প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন নয়, রয়েছে বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং দেশীয় উৎপাদনের নতুন দিগন্ত।
ভারতের (India) প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার যদি এই খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবনে আরও বেশি প্রণোদনা দেয়, তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ডিপটেক হাব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে। ডিফেন্স, রোবোটিক্স ও এআই-নির্ভর উন্নয়নের এই গতি বজায় থাকলে, ভারতের অর্থনীতিতে ডিপটেকের অবদান আগামী দশকে অভূতপূর্ব উচ্চতায় পৌঁছবে বলেই মনে করা হচ্ছে।












