আফ্রিকার এই দেশের পানশালায় মদের বদলে মেলে দুধ, সাহায্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আমাদের দেশ বা ইউরোপের বেশ কিছু দেশে ‘বার’ বলতে আমরা বুঝি সেই জায়গাকে, যেখানে মানুষ ‘হার্ড ড্রিংক’স বা মদ্যপানের আসর জমান। সূরা প্রেমীদের জন্য এ ধরনের স্থানগুলির প্রায় নিত্যদিনই ভর্তি থাকে। তবে আজ আপনাদের এমন একটি দেশের কথা বলব, যেখানে এই ধরনের বারে আদৌ কোনও অ্যালকোহল বা বিয়ার পরিবেশন করা হয় না। বরং এখানে মানুষ আসেন দুধ খেতে। অবাক হয়ে যাচ্ছেন নিশ্চয়ই। এমনই অবাক করা কান্ড ঘটে আফ্রিকার রুয়ান্ডায়।

রুয়ান্ডার রাজধানী কিগালিতে রয়েছে একাধিক ‘মিল্ক বার’। অর্থাৎ এখানে ট্যাপ খুললে আপনি বিয়ার কিম্বা অ্যালকোহল পাবেন না বরং পাবেন পরিশুদ্ধ দুধ, এবং দুধ থেকে নির্মিত পানীয়। আর এর জনপ্রিয়তা এখন রীতিমত মারাত্মক। কিগালির অধিবাসীদের মধ্যে নিয়মিত এই বারে যাবার প্রচলন রয়েছে। একসঙ্গে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে বসে এখানে তারা দুধ বা দুধ থেকে তৈরি পানীয় পান করেন। কেক, রুটি এবং কলা জাতীয় স্ন্যাক্স দিয়েও এখানে অনেকেই দুধ পান করেন। দুধেরও অনেক রকম ভাগ রয়েছে, এরই মধ্যে কার্যত দইয়ের মত একটি পানীয়ের নাম “ইকিভুগুটো”, যা এই অঞ্চলে বিশেষ জনপ্রিয়। ঠান্ডা, গরম সব ধরনের দুধেরই ব্যবস্থা রয়েছে ক্রেতাদের জন্য।

গত এক দশক ধরে সরকারি তৎপরতায় দেশের নানা প্রান্তে খোলা হয়েছে এই মিল্ক বার। যার জেরে রুয়ান্ডায় এখন গরু হয়ে উঠেছে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান উৎস। ১৯৯৪ সালে এক ভয়ঙ্কর গণহত্যায় মৃত্যু হয় ৮ লক্ষেরও বেশি মানুষের। নিহতদের অধিকাংশই তুতসি বর্ণের, যারা রাখাল হিসেবেই পরিচিত। এই গণহত্যা থেকে ফের একবার ধীরে ধীরে যখন উঠে দাঁড়াতে শুরু করে গোটা দেশ, তখনই শুরু হয় অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই। এই সময় একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয় সরকার। তারা চেয়েছিলেন মানুষের কাছে পুষ্টিকর খাদ্য এবং পানীয় পৌঁছে দিতে এবং একই সঙ্গে অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটাতে।

IMG 20211010 210349

সেই সূত্র ধরেই গরুকে একটি মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট পল কাগমে ২০০৬ সালে “গিরিঙ্কা” নামক একটি কর্মসূচি শুরু করেন। এই প্রকল্পে সারা দেশজুড়ে তিন লক্ষ আশি হাজার গরু বিলি করা হয় সরকারি তরফে। জানিয়ে রাখি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রুয়ান্ডার একটি গ্রামে ২০০ গরু দান করেন। অবশ্য শুধু আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীই নয়, বেশকিছু বিদেশী সংস্থা এবং সরকার রুয়ান্ডাকে সাহায্য করেছিল। যার জেরে আজ ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রুয়ান্ডা এবং গরু হয়ে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতির এক প্রধান ভিত্তি।

 

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর